Dr. Neem on Daraz
Victory Day

ভর্তুকি দিয়ে বই মেলা চালাতে হয় : হাবীবুল্লাহ সিরাজী


আগামী নিউজ | কামরুল হাসান প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২০, ১০:৫৪ এএম
ভর্তুকি দিয়ে বই মেলা চালাতে হয় : হাবীবুল্লাহ সিরাজী

ঢাকা : প্রতিবারের ন্যায় এবারো ভাষার মাসে চলছে দেশের সবচেয়ে বড় সাহিত্য উৎসব, অমর একুশে গ্রন্থমেলা। সংস্কৃতি মন্ত্রনালয়ের উদ্যোগে বাংলা একাডেমির আয়োজনে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গন ও সোহরাওয়ার্দী উদ্দ্যান মিলিয়ে এই মেলার আয়োজন। জাতির পিতার জন্মশতবর্ষ ঘিরে এবারের মেলা হয়েছে আরো আকর্ষণীয়। গ্রন্থমেলার নানা প্রসঙ্গ নিয়ে আগামীনিউজ ডটকম-এর মুখোমুখি হয়েছেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী।

হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, ‘গত বই মেলায়ই আমি ঘোষণা দিয়েছিলাম ২০২০ এর একুশে গ্রন্থমেলা আমরা জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের নামে উৎসর্গ করবো। তারই পরিপ্রেক্ষিতে এবারের মেলা আমরা সাজানোর চেষ্টা করেছি। পুরো মেলা বিন্যাস করার চেষ্টা করেছি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে। মাঠের পরিধি বেড়েছে। গতবারের চেয়ে এবার বইমেলার পরিধি অনেক বড়। স্টলের সংখ্যা বেড়েছে। সবদিক বিবেচনা করে মেলাটিকে বিভিন্ন পর্যায়ে শুধু সাজানো নয়, বরং মুজিব আদর্শ, মুজিবের লেখালেখি, মুজিবের জীবন নানাভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি। বাংলা একাডেমির পক্ষথেকে ইতোমধ্যেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে ২৬টি বই প্রকাশ করা হয়েছে। আগামী তিন বছরে আমরা সব মিলিয়ে ১০০টি বই প্রকাশ করবো জাতির পিতাকে নিয়ে। সবগুলো বইয়ে তার রাজনৈতিক দিক থেকে শুরু করে নানা সৃষ্টিকর্ম, সামাজিক অবদান, রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ড ইত্যাদি তুলে ধরা হবে।’

বাংলা একাডেমির এই মহাপরিচালক বলেন, ‘বাংলা একাডেমি প্রকাশিত বইয়ের ক্ষেত্রে দুটি বিষয়ে বেশি প্রাধান্য দেয়। প্রধানত গবেষণা- মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষণা, তারপর আসে লোকজীবন, লোক ঐতিহ্য, লোক গবেষণা। এরপর সৃষ্টিধর্মী বই, যেটাকে আমরা সৃজনশীল বই বলি।’

একুশে গ্রন্থমেলায় আসা মানহীন বই ও ধর্মীয় উস্কানিমূলক বই সম্পর্কে মহাপরিচালক সিরাজী বলেন, ‘বইয়ের মান নিশ্চিত করার দায়িত্ব বাংলা একাডেমির নয়। তবুও বইমেলা আয়োজনের ক্ষেত্রে বাংলা একাডেমির যেহেতু সবচেয়ে বড় ভূমিকা সুতরাং এড়িয়ে যাওয়া যায় না। বইগুলোর মান যাচাইয়ের জন্য আমরা একটি কমিটি করেছি। মেলা শেষে মোটামুটি মানসম্মত বইগুলোর একটা তালিকা প্রস্তুত করা হবে। এবং ধর্মীয় উস্কানিমূলক এবং উগ্রবাদী কিছু বই আমাদের নজরে এসেছে। ইতোমধ্যেই তাদের আমরা নোটিশ দিয়েছি। তারা হয়তো আগামী মেলায় অংশগ্রহণই করতে পারবে না।’

বই মেলার আয়োজক হিসেবে হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, ‘বাংলা একাডেমির প্রধান কাজ- গবেষণায় সহযোগিতা করা, গবেষণাপত্র প্রকাশ করা এবং গবেষণা কর্মে যারা আগ্রহী তাদের নিয়ে নানা আয়োজন করা। তবে, এর পাশাপাশি বই মেলাকে আমরা আমাদের জাতীয় দায়িত্ব হিসেবে নিয়েছি। আমাদের সবগুলো বিভাগ তাদের রুটিন মতো কাজগুলো করে। বইমেলা আমাদের আটটি বিভাগের একটি।’

তরুণ কবিদের ভবিষ্যত সম্পর্কে হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, ‘প্রতি বছর মেলায় বেশি আসে কবিতার বই, তবে এই কবিদের পরের বছর আর খুঁজে পাওয়া যায় না। কারণ কবিকে ধরে রাখবে তাঁর পাঠক আর তাঁর সৃষ্টিশীলতা। বাংলা একাডেমি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পরিকল্পনা নেয় তরুণ কবিদের প্রমোট করার জন্য। কিন্তু তার মধ্যে সৃষ্টিশীলতা না থাকলে সে কিভাবে টিকে থাকবে?’

গ্রন্থমেলার বাণিজ্যিকিকরণ নিয়ে এ মহাপরিচালক বলেন, ‘বইমেলা পরিচালনার জন্য সার্বজনীন একটা কমিটি থাকে, সেখানে প্রকাশকেরাও থাকেন। স্টল বরাদ্দের বিষয়ে, আমরা ৯৯.৯ ভাগ স্বচ্ছ থাকার চেষ্টা করেছি এখানে বাণিজ্যিকিকরনের কোনো মানে হয় না বরং এখনো প্রতি বছর বইমেলায় ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। এবার আমাদের স্পন্সর হিসেবে সহযোগিতায় আছে ‘বিকাশ’। তারাও কুলিয়ে উঠতে পারছে না। ভর্তুকি দিতে হচ্ছে আমাদেরও।’

একুশে বইমেলা প্রায় শেষের দিকে জানিয়ে হবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা মনে করি ৮০ থেকে ৯০ ভাগ সফল হয়েছি। যেভাবে আশা করেছিলাম অবকাঠামো সেভাবে করতে পেরেছি।’

আগামীনিউজ/কামরুল/ডলি/সবুজ

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে