Dr. Neem on Daraz
Victory Day

হংকংবাসীর পাশে থাকার ঘোষণা জনসনের


আগামী নিউজ | আন্তর্জাতিক ডেস্ক প্রকাশিত: জুলাই ২, ২০২০, ১০:১৩ এএম
হংকংবাসীর পাশে থাকার ঘোষণা জনসনের

চীনের বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চলের মর্যাদাপ্রাপ্ত হংকংয়ের বাসিন্দার পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। চীন সেখানে নতুন নিরাপত্তা আইন কার্যকর  ও এই আইনে একজনকে গ্রেফতারের প্রেক্ষাপটে এমন ঘোষণা দিলেন তিনি। জনসন বলেছেন হংকংয়ের ৩০ লাখ বাসিন্দাকে ব্রিটেনে বসবাস করা এবং ভবিষ্যতে নাগরিকত্ব নেয়ার সুযোগ দেয়া হবে।

গত মঙ্গলবার (৩০ জুন) চীনের পার্লামেন্টে হংকং নিরাপত্তা আইন পাসের এতে স্বাক্ষর করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। এই আইন পাসের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে একজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। এদিকে নতুন আইনের কারণে স্বায়ত্তশাসিত হংকংয়ের ওপর চীনের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা এবং ওই নগরীর স্বাধীনতা হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ কারণে নতুন জাতীয় নিরাপত্তা আইনের প্রতিবাদে প্রবল বিক্ষোভ উত্তাল হয়ে উঠেছে হংকং। এই অবস্থায় সেখানকার নাগরিকদের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী।

উল্লেখ্য, হংকং এক সময় ব্রিটেনের অধীনে ছিল। ৯৯ বছরের লিজ শেষে ১৯৯৭ সালে কিছু শর্তসাপেক্ষে দ্বীপটি চীনের কাছে হস্তান্তর করে তারা। চুক্তি অনুযায়ী চীন ‘এক দেশ, দুই নীতি’ শাসন বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দেয়, যার অধীনে ৫০ বছর হংকংয়ের নাগরিকরা পুঁজিবাদ এবং রাজনৈতিক স্বাধীনতা লাভ করতে পারবে। যে স্বাধীনতা চীনের মুল ভূখণ্ডে নিষিদ্ধ। হংকংয়ের আয়তন ২৭৫৫ বর্গ কিলোমিটার, জনসংখ্যা প্রায় ৭৫ লাখ। ২৬০ টিরও বেশি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ নিয়ে গঠিত এই অঞ্চলটি পার্ল নদীর ব-দ্বীপের পূর্ব দিকে অবস্থিত। এর উত্তরে চীনের কুয়াংতুং প্রদেশ এবং পূর্ব, পশ্চিম আর দক্ষিণে দক্ষিণ চীন সাগর অবস্থিত। হংকংয়ের অর্থনীতি অনেক শক্তিশালী

নতুন নিরাপত্তা আইনের প্রতিবাদে রাস্তায় হংকংয়ের নাগরিকরা - আল জাজিরা

ব্রিটিশ সরকার মনে করছে, সদ্য পাস হওয়া জাতীয় নিরাপত্তা আইনে হংকংয়ের স্বায়ত্তশাসনে হস্তক্ষেপ করা হবে। ফলে সেখানকার বাসিন্দাদের ব্রিটেনে গিয়ে আশ্রয় নেয়ার সুযোগ করে দিতেই এই প্রস্তাব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বরিন জনসন৷

তিনি জানিয়েছেন, সাড়ে তিন লাখ ব্রিটিশ পাসপোর্টধারী এবং আরও ২৬ লাখ যোগ্য আবেদনকারীকে আগামী পাঁচ বছর ব্রিটেনে গিয়ে বসবাসের সুযোগ দেয়া হবে। তার এক বছর পরে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ব্রিটেনের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন জানাতে পারবেন।

এর আগে হংকংয়ের যেসব বাসিন্দাদের কাছে ব্রিটিশ ন্যাশনাল ওভারসিজ পাসপোর্ট রয়েছে, ’৮০-এর দশকে তাদের বিশেষ কিছু সুযোগ সুবিধা দেয়া হয়েছিল। তবে বর্তমানে তা কাটছাঁট করা হয়েছে। তারপরও এই পাসপোর্ট যাদের রয়েছে, তারা এখনও ভিসা ছাড়াই ছয় মাসের জন্য ব্রিটেনে কাটাতে পারেন।

বরিস জনসন বরেছেন ঘোষণা দিয়েছেন, নতুন নিয়মে অনাবাসী ব্রিটিশ নাগরিক এবং তাদের ওপরে নির্ভরশীলরা পাঁচ বছরের জন্য ব্রিটেনে গিয়ে বসবাসের পাশাপাশি কর্মসংস্থান এবং পড়াশোনার সুযোগ পাবেন। পাঁচ বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পর তারা স্থায়ী বসবাসের জন্য আবেদন করতে পারবেন। তার একবছর পরই নাগরিকত্বের আবেদন করা যাবে।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ, হংকংয়ের স্থানীয় প্রশাসন মঙ্গলবার (৩০ জুন) যে নতুন আইন পাসের কথা জানিয়েছে, তা ১৯৮৫ সালে ব্রিটেন এবং চীনের মধ্যে হওয়া যৌথ ঘোষণার পরিপন্থী। নতুন এই আইন স্পষ্টতই দুই দেশের আইনি চুক্তির খেলাপ করেছে বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

ওই চুক্তি অনুযায়ী, ১৯৯৭ সালে হংকংয়ের হস্তান্তর হওয়ার পর ৫০ বছর পর্যন্ত নির্দিষ্ট কয়েকটি ক্ষেত্রে হংকং এবং সেখানকার বাসিন্দাদের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতে পারবে না চীন। বরিস জনসন বলেন, ‌যৌথ ঘোষণার মাধ্যমে হংকংকে দেয়া স্বায়ত্তশাসন এবং স্বাধীনতাকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে এই নতুন আইন।

চীনে পাস হওয়া বিতর্কিত এই আইনে কর্তৃপক্ষকে অবমাননা, সন্ত্রাসবাদ ও জাতীয় নিরাপত্তা বিপন্ন ও বিচ্ছিন্নতাবাদে বিদেশিদের সঙ্গে সম্পর্ক নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একই সঙ্গে, কেউ এ ধরনের অপরাধে যুক্ত হলে সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে বলেও জানানো হয়েছে।

তবে চীন দাবি করেছে, আইনটি হংকংয়ের স্বায়ত্তশাসনের জন্য হুমকি নয়। পশ্চিমারা বলছেন, হংকং এতদিন যে বিশেষ মর্যাদা পেয়ে আসছে, নতুন নিরাপত্তা আইনের কারণে তা আর পাবে না। ফলে সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়বে সেখানে।

আগামীনিউজ/এমজামান

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে