Dr. Neem on Daraz
Victory Day

রিপোর্ট আসতেই সপ্তাহ পার!


আগামী নিউজ | নিজস্ব প্রতিনিধি প্রকাশিত: এপ্রিল ১০, ২০২১, ০৪:৪৬ পিএম
রিপোর্ট আসতেই সপ্তাহ পার!

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকাঃ করোনা টেস্ট করানোর ছয় দিন পর ফল পেয়েছেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা শরীফুল হাসান। মমিনুল ইসলাম জানালেন, তিনি রিপোর্ট পেয়েছেন ১৭ দিন পর। গণমাধ্যমকর্মী পিয়াস তালুকদার নমুনা দিয়েছিলেন ২৭ মার্চ। রিপোর্ট পেয়েছেন ১ এপ্রিল। তার রিপোর্ট এসেছে পজিটিভ। ‘মাঝের দিনগুলোতে যদি স্বাভাবিকের মতো ঘুরে বেড়াতাম তবে আমার কাছ থেকে যে কতজন সংক্রমিত হতো!’ বিস্ময় প্রকাশ করেন পিয়াস।

শরীফুল হাসান বলেন, ‘করোনার এক বছর পার হলো। এখন অন্তুত টেস্ট করার ২৪-৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রেজাল্ট দেওয়ার সক্ষমতা থাকা উচিত আমাদের।’

বনানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে নমুনা দিয়েছিলেন শরীফুল হাসান। বলেন, ‘৪৮ ঘণ্টা পর হাসপাতালে ফোন দেই। তারা বলে ৭২ ঘণ্টা লাগবে। ৭২ ঘণ্টা পর ফোন দিলে বললো ৯৬ ঘণ্টা লাগবে। ফলাফল দিতেই যদি পাঁচ-ছয়দিন লেগে যায় তবে একজনের কাছ থেকে কতোজনের কাছে ভাইরাস ছড়াতে পারে? আমি না হয় বের হইনি পাঁচদিন। যাদের রোজ বের হতে হয় তাদের কী অবস্থা হতে পারে?’

দেশে করোনাভাইরাসের রোগী বাড়ছে রকেটের গতিতে। গত সাতদিনে (৩ এপ্রিল থেকে ৯ এপ্রিল) শনাক্ত ৪৯ হাজার জন।

শুরুতে দেশে একটি মাত্র প্রতিষ্ঠানে নমুনা পরীক্ষা হতো। সেখান থেকে র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন ও জিন-এক্সপার্ট মেশিনসহ দেশে বর্তমানে ২৪৩টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে। ২৪ ঘণ্টায় করোনার নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৩১ হাজার ৬৫৪টি।

সংক্রমণের হার বাড়ার কারণে পরীক্ষার কেন্দ্রগুলোতে রোগীর ভিড় বাড়ছে। তাই রিপোর্ট পেতেও সময় লাগছে বলে জানিয়েছে কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি।

যারা টেস্ট করাতে আসছেন, তাদের একটা বড় অংশ বিদেশগামী জানিয়ে জাতীয় কমিটি বলছে, বিদেশেগামীদের বেসরকারি পরীক্ষাগারে পাঠাতে পারলে সরকারি ল্যাবে চাপ কিছুটা কমতো।

নমুনা পরীক্ষার ফল পেতে দেরি হওয়ার কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রশিক্ষিত জনবলের অভাব ও পর্যাপ্ত পিসিআর মেশিন নেই।

‘গত কিছুদিন ধরে নমুনা সংগ্রহ হচ্ছে বেশি। সে তুলনায় লোকবল কম। এতেও ফল দিতে দেরি হচ্ছে।’জানালেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজের ভাইরোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. জাহিদুর রহমান।

তিনি আরও জানান, ‘নমুনার স্তুপ জমছে। পিসিআর মেশিন ২৪ ঘণ্টা চালানোর মতো লোকবল নেই। মেশিনও কম। মাঝে নমুনার হার কম থাকায় সংকট টের পাওয়া যায়নি।’

পিসিআর ল্যাবে বেশি দরকার মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট। তাদের নিয়োগের একটি রেজাল্ট এখনও হচ্ছে না জানিয়ে ডা. জাহিদুর রহমান বলেন, ভাইরোলজিস্ট এবং মাইক্রোবায়োলজিস্টের সংকট তো আগে থেকেই আছে।

নিজের কলেজের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘এখানে ল্যাব অনেক বড়। কিন্তু পিসিআর মেশিন একটি। চাইলে এখানে চারটি মেশিন বসানো যায়।’

বাংলাদেশ মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক মহাসচিব সেলিম মোল্লা বলেন, পিসিআর ল্যাবে কাজ করা মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট-যারা ল্যাবে কাজ করেন তাদের সংখ্যা অনেক কম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুযায়ী, একজন চিকিৎসকের বিপরীতে পাঁচজন মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট থাকার কথা। সে অনুযায়ী দেশে মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট থাকার কথা দেড় লাখ। সেখানে কাজ করছেন মাত্র পাঁচ হাজার।

আরটি-পিসিআর ল্যাবের জন্য কমপক্ষে ৭০ হাজার জনবল দরকার বলে জানান সেলিম মোল্লা। তিনি আরও বলেন, ‘প্রায় ২৫ হাজার মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট বেকার বসে আছেন। তাদের যদি কাজে লাগানো হয় তবে নমুনা পরীক্ষার ফল পেতে দীর্ঘসূত্রিতার অবসান হবে।’

স্বল্পতা কাটাতে গত জুনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক হাজার ২০০ মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট নিয়োগের নির্দেশ দেন। সেটা এখনও কার্যকর হয়নি বলেও জানান সেলিম মোল্লা।

আগামীনিউজ/প্রভাত

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে