Dr. Neem on Daraz
Victory Day

পাঁচ বছরে ফলন দ্বিগুণ


আগামী নিউজ | ডেস্ক রিপোর্ট প্রকাশিত: অক্টোবর ২২, ২০২০, ০৩:৫০ পিএম
পাঁচ বছরে ফলন দ্বিগুণ

ছবি: সংগৃহীত

চুয়াডাঙ্গা: সবজি-পান-ভুট্টাসহ স্বল্পমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী হরেক ফসল আবাদে সুখ্যাতি আছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কৃষি নির্ভর জেলা চুয়াডাঙ্গার। সেই সুখ্যাতির তালিকায় নিত্য যোগ হয়েছে আউশ ধান। গত পাঁচ বছরে জেলায় আউশের আবাদ বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণ।

এবারো ফলন ভালো হওয়ায় আউশ আবাদে সেরাদের মধ্যে স্থান করে নিয়েছে চুয়াডাঙ্গা। জেলার চারটি উপজেলায় প্রতি বছরই বাড়ছে আউশের আবাদ। এরমধ্যে সদর উপজেলায় আবাদের পরিমাণ বেশি। জেলার প্রেক্ষাপটে নানামুখী সুবিধা ও ধানের দাম ভালো থাকায় লাভের প্রত্যাশায় আউশ চাষাবাদে আগ্রহ দেখাচ্ছে কৃষকরা। 

সমতলভূমি এবং মাঝারি উঁচু প্রকৃতির জেলা চুয়াডাঙ্গা। বৃষ্টি নির্ভর জেলার আবহাওয়া আউশ ধান চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। ভূগর্ভস্থ থেকে পানির জোগান না দেয়াসহ বেশ কিছু সুবিধা ভোগ করে কৃষকরা। এছাড়া স্বল্প সময়ে চাষ করা যায় এবং ক্ষেত থেকে আউশ ধান তুলে নেয়ার পর কৃষকরা সেই জমিতে আগাম সবজি আবাদ করতে পারেন। এসব সুবিধার জন্য এখানকার কৃষকরা আউশ চাষে ঝুঁকছেন। গত বছরের তুলনায় এ বছর আউশের আবাদ বেড়েছে ৪ হাজার ৭৭৩ হেক্টর জমিতে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য বলছে, ২০১৫ সালে চুয়াডাঙ্গা জেলায় আউশ ধানের আবাদ ছিল ২১ হাজার ৩২৫ হেক্টর জমিতে। পাঁচ বছর পর ২০২০ সালে বছরে আবাদ হয়েছে ৪৩ হাজার ১৭৩ হেক্টর জমিতে। যা পাঁচ বছর আগের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি আবাদ হয়েছে সদর উপজেলায়। যা ১৫ হাজার ৬৮৫ হেক্টর জমিতে। আলমডাঙ্গায় ৭ হাজার ৭৮৫, দামুড়হুদায় ১০ হাজার ৫৮৪ ও জীবননগর উপজেলায় ৯ হাজার ১১৯ হেক্টর জমিতে আউশ ধানের চাষ হয়েছে। 

দামুড়হুদার জুড়ানপুর গ্রামের ধানচাষি আমীর আলী জানান, তিনি আউশের ব্রি-৪৮ জাতের ধান আবাদ করেছিলেন। ফলন হয়েছে ভালো। এ মৌসুমে পর্যাপ্ত বৃষ্টির আর্শীবাদে জমিতে আলাদাভাবে সেচ দিতে হয়নি। যার কারণে খরচ অনেকটা কমেছে। ধানের পাশাপাশি বিচিলি থেকেও ভালো অর্থ পাওয়া গেছে। 

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার সরোজগঞ্জ এলাকার কৃষক আব্দুল মালেক জানান, তিনি চার বিঘা জমিতে আউশ ধানের আবাদ করেছিলেন। বিঘাপ্রতি খরচ হয়েছিল ২৮-৩০ হাজার টাকা। বিঘা থেকে প্রায় ১৮ মণ ধান পেয়েছেন তিনি। বিক্রি হয়েছে প্রতি মণ এক হাজার ১০-১৫ টাকায়। সঙ্গে বিচালিও পাওয়া গেছে। সব মিলিয়ে প্রতি বিঘা থেকে লাভ হয়েছে ১২-১৪ হাজার টাকা।

জীবননগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন ইসলাম জানান, এ বছর ইটভাটা ও অনাবাদি পতিত জমিতেও আউশ ধানের আবাদ দেখা গেছে। যার কারণে জেলায় আউশ আবাদ অনেকটা বেড়েছে। 

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তালহা জুবাইর মাসরুর জানান, শস্যবিন্যাস অনুযায়ী চুয়াডাঙ্গায় আউশ রোপণ দেরিতে হয়। আউশ ধানকাটার পরই শুরু হয় আগাম সবজি রোপনের কর্মযজ্ঞ। এছাড়া বোরো ও আমন ধান উৎপাদনের চেয়ে কম সময়ে আউশ ধান ঘরে তোলা যায়। এসব সুবিধার জন্যই আউশ ধানের আবাদ বাড়ছে আনুপাতিক হারে।

চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আলী হাসান জানান, সারাদেশে আউশের গড় ফলন (চালে) প্রতি হেক্টরে ২ দশমিক ৮ টন। চুয়াডাঙ্গা জেলায় তা ৩ দশমিক ৪৭ টন। সে হিসেবে সারাদেশের মধ্যে আউশের গড় আবাদ ও ফলনে চুয়াডাঙ্গা জেলা অবস্থান করছে আউশ আবাদের সেরাদের তালিকায়। এমনিতেই চুয়াডাঙ্গা জেলা খাদ্যে উদ্বৃত্ত। তারপরও এ বছর জেলায় শুধু আউশ ধানই উৎপাদন হয়েছে প্রায় এক লাখ ৫০ হাজার টন। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ১০ হাজার টন বেশি।

আগামীনিউজ/এএইচ

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে