Dr. Neem on Daraz
Victory Day

গণসংক্রমণে ঝুঁকিতে চট্টগ্রাম


আগামী নিউজ | নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: মে ২৯, ২০২০, ০৯:২১ এএম
গণসংক্রমণে ঝুঁকিতে চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। ইতিমধ্যে জেলায় আক্রান্ত ২ হাজার ছাড়িয়েছে। মারা গেছে ৬৫ জন। এর মধ্যে শেষ ৬ দিনে ৮৮৪ রোগী শনাক্ত ও ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। দিনে প্রায় ১৫০ জন শনাক্তের বর্তমান অবস্থাকে ‘গণসংক্রমণ’ আখ্যায়িত করে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখনই প্রয়োজন কার্যকর লকডাউন। তা না করে গণপরিবহনসহ সবকিছু চালু করার সিদ্ধান্ত হবে আত্মঘাতী।

সংশ্লিষ্টরা জানান, তৈরি পোশাক কারখানা চালু হওয়ায় শ্রমিকদের অবাধ চলাচল, ঈদুল ফিতর ঘিরে গ্রামে যাওয়া-আসা এবং সামাজিক দূরত্ব না মানায় চট্টগ্রামে করোনা সংক্রমণ ব্যাপক হারে বাড়ছে। গত বুধবার এক দিনেই ২১৫ রোগী শনাক্ত হয়েছে। ২২ মে থেকে বুধবার পর্যন্ত শেষ ৬ দিনে এই সংখ্যা ৮৮৪। এদের মধ্যে বিআইটিআইডির ল্যাবপ্রধান অধ্যাপক ডা. শাকিল আহমেদ, সাংবাদিক, ওয়ার্ড কাউন্সিলরও রয়েছেন।

করোনা আক্রান্ত ডা. শাকিল আহমেদ বলেন, ‘সামাজিক সংক্রমণের ফলে রোগী বাড়ছে এতে কোনো সন্দেহ নেই। সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা হচ্ছে না। সংক্রমিত অঞ্চল থেকে এলেও কেউই স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। এতে জেলার পরিস্থিতি দিনকে দিন অবনতির দিকে যাচ্ছে।’ গত ২৫ মার্চ প্রথম চট্টগ্রামের বিআইটিআইডিতে অধ্যাপক ডা. শাকিল আহমেদের নেতৃত্বে কভিড-১৯ পরীক্ষা শুরু হয়। এরপর কক্সবাজার, সিভাসু ও চমেক এতে যুক্ত হয়। সবশেষ ২৭ মে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান অনুষদের গবেষণাগারও পরীক্ষার অনুমতি পেয়েছে। ডা. শাকিল মনে করছেন, বিআইটিআইডিতে আসা কোনো আক্রান্তের মাধ্যমে তিনি সংক্রমিত হয়েছেন।

গত ২৬ মে রাতে চসিকের ৩০ নম্বর পূর্ব মাদারবাড়ীর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী (৬৮) ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা যান। চট্টগ্রামে প্রথম পরীক্ষায় তার নেগেটিভ এলেও ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তির পর দ্বিতীয় পরীক্ষায় পজিটিভ আসে। এরপর গত বুধবার চসিকের ৩৩ নম্বর ফিরিঙ্গী বাজার ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব আক্রান্ত হন। তার এক স্বজন জানান, ত্রাণ বিতরণ করতে গিয়েই বিপ্লব সংক্রমিত হয়েছেন। তবে এখন তিনি অনেকটাই সুস্থ।

জনস্বাস্থ্য অধিকার রক্ষা কমিটির সদস্য সচিব ডা. সুশান্ত বড়ুয়া বলেন, ‘কিছু বিধিনিষেধ শিথিলের পরই জেলায় রোগী বাড়তে থাকে। এমন অবস্থায় অফিস ও গণপরিবহন চালুর সিদ্ধান্ত হবে আত্মঘাতী। কেননা শুধু মাস্ক পরে করোনা ঠেকানো যায় না। লঞ্চ ও গণপরিবহনে সামাজিক দূরত্ব সম্ভব হবে না। ফলে পরিবারের সবাই আক্রান্ত হবে।’ ক্ষোভ প্রকাশ করে জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটের এক চিকিৎসক বলেন, ‘আমরা রোগী নিয়ে যুদ্ধ করছি। অথচ সবকিছু চালুর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রামের এমন কোনো এলাকাই নেই যেখানে রোগী নেই। বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ঈদের ছুটিফেরতদের ঠেকাতে না পারলে বিপর্যয় নেমে আসবে।’

জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘চট্টগ্রামে গত বুধবার পর্যন্ত মোট ২ হাজার ২০০ জন শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে মারা গেছে ৬৫ জন। জেলায় এখন ব্যাপক হারে ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটছে। গত পাঁচ দিনেই ৮ শতাধিক রোগী পাওয়া গেছে। এদের ৭৫ শতাংশই নগরীর বাসিন্দা। বাজার, অলিগলিতে জনসমাগম হচ্ছে। ফলে সংক্রমণ ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে।’

এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. আব্দুর রব জানান, তাদের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে তরুণীটি (১৮) কিডনির জটিলতায় ভুগছিলেন। আর ৪৫ বছর বয়সী পুরুষ উপসর্গ নিয়ে গত ২৬ মে ভর্তি হন। (খবর: দৈনিক দেশ রূপান্তর, ২৯ মে,২০২০) 

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে