Dr. Neem on Daraz
Victory Day

তবুও খুশির বারতা নিয়ে আসুক ঈদ


আগামী নিউজ | নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: মে ২৩, ২০২০, ০৪:২৭ এএম
তবুও খুশির বারতা নিয়ে আসুক ঈদ

ছবি: ইত্তেফাক

নিয়মমতো সবকিছুই হবে। ঈদের চাঁদ দেখার জন্য ছাদে ছাদে উত্সুক নয়ন মেলে বসে থাকা। ঈদের জামাতে নামাজ পড়া, বাসায় এসে সেমাই পায়েস খাওয়া। সবকিছু থাকলেও যেন বাঙালির ঈদের সেই আনন্দ থাকবে না ঘরে ঘরে। বাংলাদেশে ঈদ মানেই নাড়ির টানে ঘরে ফেরা। রাস্তায় জ্যামের ভোগান্তি, টিকিট কেনার ঝক্কি ঠেলে পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে যাবার যে তীব্র আনন্দ এবার বাঙালির জীবনে তা নেই। কারণ, এবার বাড়ি যাওয়া হচ্ছে না। মিলবে না প্রিয়জনের স্নেহমাখা স্পর্শ। স্মৃতিঘেরা বাড়ি, পাড়া-মহল্লায় আড্ডাও জমবে না এবার। অনেকের কাছেই ঈদ হবে নিরানন্দের। এবারের ঈদ যেন এক অচেনা ঈদ হয়ে ধরা দেবে সবার কাছে।

ঈদ তো শুধু আনন্দ উপলক্ষ্য নয় বাঙালি মুসলমানের কাছে এটা এক ধরনের মিলনমেলাও। ঈদ এলেই মানুষের বাড়ির টানের তীব্রতা চোখে ধরা পড়ে বেশি। সীমাহীন যানজট উজিয়ে, বেশি ভাড়া গুণে, পথের নিদারুণ কষ্ট সহ্য করে তারা ফিরতে চায় তার ফেলে আসা স্মৃতিগন্ধমাখা বাড়িতে, প্রিয় মানুষগুলোর কাছে। মনের কোনে বারবার হাতছানি দেয় সেই মেঠো পথ, জমির আল ধরে ধানখেতের মাঝ দিয়ে হেঁটে যাওয়া, সবুজ গাছের সারি, নদীর পানিতে ঝাপাঝাপি আর দল বেঁধে মাছ ধরার স্মৃতিময় দিনগুলো।

এবার বদলে গেছে ঈদের দৃশ্যপট। চাঁদ দেখা গেলে এক দিন বাদেই ঈদ। অথচ, প্রতি বছরের মতো এবার ঈদে বাড়ি ফেরার সেই বিশাল কর্মযজ্ঞ নেই। বরং, বাড়ি না যাওয়ার জন্য রাস্তা জুড়ে কড়াকড়ি। বাস, ট্রেন বন্ধ। রাস্তাঘাট ফাঁকা। বাসস্ট্যান্ড, রেল স্টেশন, লঞ্চ টার্মিনালে নেই বাড়ি ফেরার মানুষের ভিড়। আগে বাড়ি যাওয়া ছিল আনন্দের। আর এখন বাড়ি ফেরা আটকাতে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে ফেরিঘাট। এই করোনাকাল মানুষের চালচিত্র বদলে দিয়েছে পুরোপুরি।

লকডাউন ৩০ মে পর্যন্ত বৃদ্ধির পরেই বোঝা গিয়েছিল এবার ঈদ আগের মতো হবে না। শপিংমলে নেই ক্রেতাদের ভিড়। ঈদের কেনাকাটা বাড়াতে র্যাফেল ড্র, শপিং মলের সামনে আলোকসজ্জা সব কিছুই এবার অনুপস্থিত। আবার লকডাউনের জন্য মানুষের আগ্রহও কম দেখা গেছে কেনাকাটায়। ফলে, ঈদ তার রং হারিয়েছে অনেক আগেই।

যেখানে রোজার সময় মসজিদে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে তারাবির নামাজ পড়ার জন্য মুসল্লিদের ভিড় দেখা যেত। এখন স্পর্শ বাঁচাতে সবাই দূরে দূরে। মানুষের স্পর্শ বাঁচাতেই শপিং মলগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় নেই। মানুষের জীবনযাত্রা একেবারেই ওলটপালট করে দিয়েছে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ।

কামরুল আনাম নান্নু প্রতি বছর ঈদে সপরিবারে ঈদে বাড়ি যান। তিনি জানালেন, ২০০০ সাল থেকে ঢাকায় তারা দুই ভাই থাকেন। প্রতি বছর দুই ঈদেই ভাই, স্ত্রী, বাচ্চা সবাইকে নিয়ে বাড়ি যান তারা। অন্য দুই ভাই চাকরি করেন ভিন্ন জেলায়। তারাও চলে আসে। ঈদকে ঘিরে পারিবারিক মিলনমেলা বসে বাড়িতে। এবার তা হচ্ছে না।

এবারের ঈদ তাই হয়ে উঠবে অনেকটাই ভার্চুয়াল ঈদ উদ্যাপন। চাকরি বা ব্যবসার কারণে যে যেখানে থাকে সেখানেই এবারের ঈদ। সেই ঈদও কাটবে বাড়ির চার দেয়ালের ভেতরেই। সবাই ঈদের দিন সেল ফোনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও কল করেই সারবেন ঈদে প্রিয়জনের সঙ্গে কুশল বিনিময়ের পালা। কিংবা অনলাইন প্লাটফর্ম জুমে চলবে গ্রুপ আড্ডা। করোনাকাল আমাদের ঘরবন্দি করে দিয়েছে। কিন্তু প্রযুক্তির কল্যাণে বাড়ি না যেতে পারার কষ্ট কিছুটা হলেও কমবে। দেখা হবে ভিডিও কলে। করোনাকালে এতেই খুঁজে নিতে হবে ঈদের আনন্দ। সূত্র: ইত্তেফাক।

আগামীনিউজ/বিজয়
 

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে