Dr. Neem on Daraz
Victory Day
রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র

রিয়াক্টারসহ ভারী যন্ত্রাংশ তৈরিতে ৩য় কিস্তির অর্থ ছাড়


আগামী নিউজ | আমির হামজা প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৩, ২০২০, ০৮:৫২ পিএম
রিয়াক্টারসহ ভারী যন্ত্রাংশ তৈরিতে ৩য় কিস্তির অর্থ ছাড়

দেশের সবচেয়ে বড় প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য প্রথম রিয়াক্টারসহ ভারী যন্ত্রাংশ তৈরি করছে রাশিয়ার পারমাণবিক বিদ্যুতের যন্ত্রপাতি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান অ্যাটম এর্নাগো ম্যাস। এজন্য বুধবার (২৩ জানুয়ারি) সরকার রূপপুর প্রকল্পের তৃতীয় কিস্তির ৮৩৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকা ছাড়ের বিষয়টি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় অর্থ বিভাগকে অবহিত ও অনুমতি নিয়েছে।

সম্পূর্ণ প্রকল্পটি তৈরি করতে খরচ হবে বাংলাদেশি টাকা ১ লাখ কোটি টাকার ওপরে। আর রাশিয়ান ফেডারেশন বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে ১১ দশমিক ৪ বিলিয়ান মার্কিন ডলার সমমূল্যের প্রায় ৯০ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে। রাশিয়ার ঋণ ছাড়া অবশিষ্ট অর্থায়ন করবে বাংলাদেশ সরকার।

চলতি অর্থ বছর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য বরাদ্দ রয়েছে ২ হাজার ৮৪৬ কোটি ৭ লাখ টাকা এর মধ্যে বৈদেশিক মূদ্রার ধার্যকৃত রয়েছে  ২ হাজার ৩৫৪ কোটি ৮০ লাখ টাকা।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান বলেন, বর্তমানে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য যে রিয়াক্টের অন্যান্য যন্ত্রণাংশ তৈরি করা হচ্ছে তা হচ্ছে তৃতীয় বিদ্যুৎ কেন্দ্র। জাপানের ফুকোশিমা পারমাণিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বিপর্ষয়ের পর রাশিয়া ফেডারেশ আমাদের জন্যই এর প্রযুক্তি ব্যবহার করছে।

তিনি বলেন, আমাদের রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য কোর ক্যাচার স্থাপন করা হচ্ছে ফলে পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কোনো ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা কমে আসবে। এই তৃতীয় প্রজন্মের প্রযুক্তির প্রতিটা ক্ষেত্রে এনার্জি সেফ করবে।

প্রকল্পসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অ্যাটমস্ট্রয়ের নকশায় পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থাসংবলিত সর্বাধুনিক তৃতীয় প্রজন্মের প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্থাপন হচ্ছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে।

চুক্তি অনুযায়ী, দেশের প্রথম এ পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তেজস্ক্রিয় বর্জ্য রাশিয়া ফেরত নিয়ে যাবে। ফলে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিরাপত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই।

জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকল্পের নিরাপত্তার বিষয়টিতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে বলেছেন। ‘সেফটি ফার্স্ট নো কম্প্রোমাইজ’- প্রধানমন্ত্রীর এ সতর্কবাণী মাথায় রেখেই দেশের পরমাণুবিজ্ঞানীরা প্রকল্প বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করছেন।

পাঁচ স্তরবিশিষ্ট নিরাপত্তা বেষ্টনীর এ প্রকল্পটি আট মাত্রার ভূমিকম্প সহনশীল। এমনকি এ প্রকল্পের ওপর বিমান ধ্বংস হলে বা কেউ প্রচেষ্টা চালিয়েও এর কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। সর্বোচ্চ নিরাপত্তার জন্য রাশিয়ার নব উদ্ভাবিত ও উন্নত ‘কোর ক্যাচার’ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ব্যবহৃত হবে। যে কোনো জরুরি অবস্থায় পারমাণবিক চুল্লির তরল ও কঠিন অংশগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভেতরে এসে জমা হবে এবং সুরক্ষিত থাকবে। এর ফলে চুল্লির কনটেইনমেন্ট কাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারবে না এবং তেজস্ক্রিয়তাও বাইরে ছড়িয়ে পড়ার কোনো সুযোগ থাকবে না।

প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা জানান, বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের প্রথম ধাপের কাজ ২০২২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেই শেষ হবে। ২০২৪ সালের অক্টোবরে প্রভিশনাল টেকওভার করা হবে। কোনো সমস্যা সৃষ্টি না হলে এর ১ বছর পর বাংলাদেশের কাছে চূড়ান্তভাবে কেন্দ্রটি হস্তান্তর করা হবে। প্রকল্পটিতে প্রতি ইউনিটের উৎপাদন ক্ষমতা ১২০০ মেগাওয়াট। এ হিসাবে ২ ইউনিটের মোট উৎপাদন ক্ষমতা হবে ২৪০০ মেগাওয়াট। কেন্দ্রটির ইকোনমিক লাইফ ৫০ বছর।

 

আগামীনিউজ/এএইচ/এএম

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে