Dr. Neem on Daraz
Victory Day

করোনার মধ্যেই এক মাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্সের রেকর্ড


আগামী নিউজ | নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: আগস্ট ৩, ২০২০, ০৯:০১ পিএম
করোনার মধ্যেই এক মাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্সের রেকর্ড

ঢাকা : বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের মধ্যেই দেশে সদ্য সমাপ্ত জুলাই মাসে অতীতের রেকর্ড ভেঙে এক মাসে সর্বোচ্চ পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্যে এ মাসে তারা দেশে প্রায় ২৬০ কোটি মার্কিন ডলারের রেকর্ড রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। এটাই বৈধভাবে একক মাস হিসেবে রেমিট্যান্স আসার সর্বোচ্চ রেকর্ড।

অথচ বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান এবং দেশীয় গবেষণা সংস্থাগুলো ইতোপূর্বে সতর্কবাণী দিয়েছিল এবং শঙ্কা ব্যক্ত করেছিল যে, করোনার বিশ্ব মহামারীর কারণে অভিবাসী বাংলাদেশিদের প্রেরিত অর্থ বা রেমিট্যান্স ২২ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে। প্রথম মাস দুয়েক রেমিট্যান্স প্রবাহ কিছুটা কমে গেলেও সেই সতর্কবাণীকে ভুল প্রমাষ করে বিদ্যমান করোনার মধ্যেই প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স জুলাই মাসে ইতিহাসের সর্বোচ্চ অর্থাৎ রেকর্ড পরিমাণ ২৩০ কোটি ডলারেরও বেশি দেশে এসেছে বলে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের বক্তব্য অনুযায়ী বর্তমানে বিশ্বের ১৭৪টি দেশে এক কোটি ২০ লাখের অধিক বাংলাদেশি অভিবাসীকর্মী কর্মরত আছেন। গত ১০ বছর পেশাজীবী, দক্ষ, আধাদক্ষ ও স্বল্পদক্ষ ক্যাটাগরিতে মোট ৬৬ লাখ ৩৩ হাজারের বেশি বৈদেশিক কর্মসংস্থান হয়েছে, যা এ পর্যন্ত মোট কর্মসংস্থানের প্রায় ৬০ শতাংশ। এর মধ্যে ২০১৯ সালে সাত লাখের বেশি মানুষের বৈদেশিক কর্মসংস্থান হয়েছে। এছাড়া অবৈধভাবেও যাওয়া বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশিও বিভিন্ন দেশে অঅবস্থান করছেন। তারাও বৈধ-অবৈধ বিভিন্ন উপায়ে দেশে টাকা পাঠাচ্ছেন।

এদিকে প্রবাসীরা রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠানোয় গত ৩০ জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল তিন হাজার ৭২৯ কোটি ডলার (বাংলাদেশি তিন লাখ ১৬ হাজার ২০৪ কোটি টাকা)। আজ (৩ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক কাজী ছাইদুর রহমান গণমাধ্যমকে এমন তথ্য জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সদ্য সমাপ্ত মাসে (জুলাই'২০২০) রেমিট্যান্স এসেছে ২৫৯ কোটি ৯৫ লাখ ডলার। একক মাস হিসেবে যা বাংলাদেশের ইতিহাসে এযাবৎকালের সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ। এর আগে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছিল চলতি বছরের জুনে। ওই মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৮৩ কোটি ৩০ লাখ ডলার।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, সদ্যসমাপ্ত ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রবাসীরা মোট এক হাজার ৮২০ কোটি ৪৯ লাখ ডলারের সমপরিমাণ অর্থ দেশে পাঠিয়েছেন। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ এক লাখ ৫৪ হাজার ৭৪২ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ধরে)। এর আগে কোনো অর্থবছরে এতো অর্থ দেশে আসেনি। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে রেমিট্যান্স আহরণে রেকর্ড হয়। ওই সময়ে প্রবাসীরা এক হাজার ৬৪২ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন। সেই হিসাবে আগের অর্থবছরের তুলনায় সদ্যসমাপ্ত অর্থবছরে রেমিট্যান্স বেড়েছে ১৭৮ কোটি ৫৩ লাখ ডলার বা ১৫ হাজার কোটি টাকা।

জানা গেছে, গত অর্থবছর রেমিট্যান্সের ওপর ঘোষিত ২ শতাংশ প্রণোদনা ঘোষণা করে সরকার। এরপর থেকেই বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্সপ্রবাহ বাড়তে থাকে। তবে করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বব্যাপী লকডাউনের ফলে মার্চ ও এপ্রিল দুই মাস রেমিট্যান্স আসার পরিমাণ কিছুটা কমে যায়। পরে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে গত ঈদুল ফিতরের সময় মে মাসে আবারও রেমিট্যান্সপ্রবাহ বেড়ে যায়। যার ধারাবাহিকতায় রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স এসছে দেশে। করোনায় বৈশ্বিক অর্থনীতির অবনতি না হলে রেমিট্যান্স আরও বেশি হতো বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।

এদিকে ২০১৯-২০ অর্থবছরের মতো রেমিট্যান্স বাড়াতে চলতি অর্থবছরও এ খাতে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বাজেট বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘প্রবাসীদের সামগ্রিক কল্যাণ ও সুযোগের সমতা নিশ্চিতকরণ, কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে নতুন নতুন শ্রমবাজার সৃষ্টি এবং বাজারের চাহিদা অনুযায়ী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে সরকার কাজ করছে।’

আগামীনিউজ/এমজামান

   

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে