Dr. Neem on Daraz
Victory Day

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের বয়স বাড়ল দুইবছর


আগামী নিউজ | নিউজ ডেস্ক প্রকাশিত: জুলাই ৯, ২০২০, ০২:২৬ পিএম
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের বয়স বাড়ল দুইবছর

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের বয়স ৬৫ বছর থেকে বাড়িয়ে ৬৭ বছর করা হয়েছে। বাজেট অধিবেশনের শেষ দিনে এ সংক্রান্ত একটি বিল আজ (৯ জুলাই) জাতীয় সংসদে বিল পাস হয়েছে।  অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের পক্ষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এ সংক্রান্ত ১৯৭২ সালের ‘দ্য বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার’ সংশোধনের জন্য ‘বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল-২০২০’  পাসের জন্য সংসদে উপস্থাপন করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।

এর আগে জাতীয় পার্টির (জাপা) মজিবুল হক, পীর ফজলুর রহমান, রওশন আরা মান্নান, শামীম হায়দার পাটোয়ারী এবং বিএনপির হারুনুর রশীদ বিলের ওপর জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাব আনলে তা কন্ঠ ভোটে নাকচ হয়ে যায়।

সদ্য মেয়াদ শেষ হওয়া বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে করিমকে এ পদে নিয়োগ দিতেই আইনের সংশোধনী আনা হচ্ছে অভিযোগ তুলে সংসদের প্রধান বিরোদী দল জাতীয় পার্টি (জাপা) ও বিএনপির এমপিরা আপত্তি জানান। তারা বলেন, কোনো এক ব্যক্তির জন্য এমন আইন করা উচিত নয়। অবশ্য আইন সংশোধনে ফজলে করিমকে রাখা একটি অন্যতম কারণ বলে স্বীকার করেন পরিকল্পনামন্ত্রী।

বিলের ওপর জনমত যাচাইয়ের প্রস্তাব তোলার সময় বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বলেন, একজনের জন্য এই আইন করা হচ্ছে। যোগ্য লোককে নিয়োগের পথ বন্ধ করা হচ্ছে। অর্থাৎ অন্য যারা আছেন তাদের অযোগ্য মনে করছি। হারুন খসড়া আইনটি প্রত্যাহারের দাবি জানান।

জাপার মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘গভর্নর পদে বয়স ৬৭ করা হলে সিভিল সার্ভিসের সবাই চাইবে তাদেরও বয়স বাড়ানো হোক। এই দাবি ওঠবে। সরকারের এ বিষয়ে গভীরভাবে চিন্তা করা উচিত। আরেকটা কথা, যোগ্য লোক হলেই ভালো গভর্নর হবেন এমন না। একজন গভর্নরের সময় রিজার্ভ চুরি হয়েছিল। এই গভর্নর কী সেই টাকা ফেরত এনেছেন? ঋণ খেলাপিদের বিষয়ে তিনি কী পদক্ষেপ নিয়েছেন আমরা জানি না।  একজন ব্যক্তির জন্য এই আইন করা হলে ঠিক নয়।’

একই দলের আরেক সদস্য পীর ফজলুর রহমান বলেন, ‘এ আইনের মূল লক্ষ্য হচ্ছে যিনি গভর্নর আছেন তাকে ৬৭ বছর পর্যন্ত রাখা হবে। অভিজ্ঞতা, কর্মদক্ষতা কীভাবে নিরূপন করবো? রিজার্ভ চুরির টাকা তিনি ফেরত আনতে পারেননি, খেলাপি ঋণ উদ্ধার করতে পারেননি। বাংলাদেশ ব্যাংকের মনিটরিংয়ের ফাঁকে টাকা কীভাবে পাচার করে? এই পাচার বন্ধ করতে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। সরকারি ব্যাংকগুলোতে মূলধন সরবরাহ করার পরও এ অবস্থায় উনাকে ৬৭ বছর করার আইন আনা হচ্ছে। ব্যাংক খাতে সংস্কার হওয়া দরকার ছিল তা করতে পারেননি।’

এসব বক্তব্যের জবাবে অর্থমন্ত্রীর পক্ষে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘সরকার কোনো বক্তির জন্য নয়, গভর্নর পদের জন্য আইন করছে।’

তিনি বলেন, ‘সংসদ সদস্যরা অনেক যুক্তিসঙ্গত কথা বলছেন। সবচেয়ে বড় যুক্তি বাস্তবতা। সেই বাস্তবতার জায়গা থেকে এই আইন করা হচ্ছে।’

পরে সংশোধনী প্রস্তাব তোলার সময় বিএনপির হারুনুর রশীদ বলেন, ‘আমরা দেখত চাই এই আইন পাস হওয়ার পর  নতুন কোন ব্যক্তিকে গভর্নর পদে নিয়োগ দেয়া হয়।’

এর জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংককে শক্তিশালী করতে আইনটি করা প্রয়োজন।  কোনো ব্যক্তির জন্য এটা হচ্ছে না, প্রয়োজনের জন্য করা হয়েছে। সামনে কেউ যদি মনে করেন ৭০ করবেন তা করতে পারেন।’

সংসদে কোনো বিল উত্থাপনের পর সাধারণত সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী বিলটি সংসদীয় কমিটিতে পাঠান। তবে এই বিলের ক্ষেত্রে সেটি হয়নি। পাস হওয়া বিলে বলা হয়েছে, ৬৭ বছর বয়স পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর থাকা যাবে।

বিদ্যমান আইনে বলা হয়েছে, বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার অনুযায়ী ৬৫ বছরের বেশি বয়স হলে কেউ গভর্নর পদে থাকতে পারবেন না। বিদ্যমান আইনে গভর্নর পদে ফজলে কবিরের মেয়াদ বৃদ্ধির সুযোগ নেই। কিন্তু কোভিড-১৯ মহামারীর এই সময়ে ফজলে কবিরকে আরও দুই বছর রাখতে চায় সরকার। মূলত সে কারণেই আইন সংশোধনের প্রয়োজন হল।

গত ২ জুলাই ছিল ফজলে কবিরের শেষ কর্মদিবস। ৬৫ বছর পূর্ণ হওয়ায় তাকে পুনঃনিয়োগ দিতে পারেনি সরকার।

আগামীনিউজ/এমজামান

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে