Dr. Neem on Daraz
Victory Day

অধিকাংশ শিল্পীর জীবনই কাটছে দুর্দশায়


আগামী নিউজ | নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৭, ২০২০, ০১:৩৮ এএম
অধিকাংশ শিল্পীর জীবনই কাটছে দুর্দশায়

ছবি; সংগৃহীত

সাতক্ষীরাঃ  সাতক্ষীরা প্রাচীনকালে বুড়ন দ্বীপ নামে খ্যাত ছিল। জানা যায়, চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সময় নদীয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের কর্মচারী বিষ্ণুরাম চক্রবর্তী ১৭৭২ সালে নিলামে বুড়ন পরগনা কিনে গ্রাম স্থাপন করেন। তার ছেলে প্রাণনাথ চক্রবর্তী এখানে প্রতিষ্ঠিত করেন সাতঘর কুলীন ব্রাহ্মণ। সেই থেকে এই জায়গার নাম হয় ‘সাতঘরিয়া’। ইংরেজ রাজকর্মচারীদের মুখে মুখে তা হয়ে যায় ‘সাতক্ষীরা’। এখানকার দর্শনীয় তালিকায় আছে ঈশ্বরীপুর হাম্মামখানা, নলতা শরিফ, দরবার স্তম্ভ, জমিদারবাড়ি জামে মসজিদ, প্রবাজপুর শাহি মসজিদ, তেঁতুলিয়া জামে মসজিদ, সোনাবাড়িয়া মঠমন্দির, অন্নপূর্ণা মন্দির, ছয়ঘরিয়া জোড়া শিবমন্দির, শ্যামসুন্দর মন্দির, পর্যটন কেন্দ্র মোজাফফর গার্ডেন, শ্যামনগর উপজেলার ঈশ্বরীপুর গ্রামে বাংলাদেশের প্রথম খ্রিস্টান গির্জা। সুন্দরবনকে বুকে নিয়ে গড়ে ওঠা সমৃদ্ধ সাতক্ষীরার শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি থেকে শুরু করে সব সুন্দর ম্লান হয়ে গেছে করোনার থাবায়।

সূত্র জানায়, সাতক্ষীরায় সাংস্কৃতিক সংগঠনের সংখ্যা প্রায় ৫০টি। সংস্কৃতিকর্মীর সংখ্যা রয়েছে প্রায় ৪০০, যারা সরকারি-বেসরকারি নানা অনুষ্ঠান করে জীবিকানির্বাহ করেন। এদের মধ্যে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে ৩৪৪ জনের তালিকা পাঠানো হলেও তাদের মধ্য থেকে যাচাই-বাছাই করে তালিকা পাঠানো হয়েছে ২০০ জনের। সেখান থেকে সহায়তা দেয়া হয়েছে মাত্র ১০০ জনকে।

ক্ষোভ প্রকাশ করে সংশ্লিষ্টরা জানান, অধিকাংশ শিল্পীর জীবনই কাটছে অর্থনৈতিক দুর্দশায়। অথচ শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক এবং তাকে ঘিরে থাকা খাতিরের লোকজন মিলে সহায়তা নিয়ে স্বজনপ্রীতি করেছেন। অন্যদিকে প্রকৃত শিল্পীরা অনন্যোপায় হয়ে কেউ কেউ ধারদেনা করে চলছেন। কেউ বা ভ্যান ও রিকশা চালাচ্ছেন। কেউ কেউ পেশা ছেড়ে দেয়ার কথাও ভাবছেন।

সাতক্ষীরা উদীচীর সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, কিছু শিল্পী প্রশাসনের সঙ্গে লবিং করে গোটা শিল্পী সমাজের প্রতি অবিচার করেছেন। শিল্পী চৈতালী মুখার্জির কণ্ঠেও একই ক্ষোভের কথা উচ্চারিত হলো। তিনি বলেন, এমন দুঃসময়েও শিল্পীদের জন্য সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সহায়তা নিয়ে হয়েছে নয়ছয়। ১০০ জনকে ৫ হাজার টাকা করে সহায়তা দেয়ার কথা বললেও মূলত দেয়া হয়েছে ১০-২০ জনকে। বাকিদের কাউকে কাউকে দেয়া হয়েছে ২ হাজার ৫০০ টাকা করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অন্য এক শিল্পী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, করোনা শিল্পকলা ‘মার্কামারা’ দুজন শিল্পীর কাছে জিম্মি। ওদের সঙ্গে পলিটিক্স করে টিকে থাকা সম্ভব নয়। এমন বাজে অবস্থার অবসান হওয়া উচিত। নইলে শিল্পাঙ্গনে নোংরামিরই জন্ম হবে।

সাতক্ষীরা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ও শিল্পী আবু আফফান রোজ বাবু বলেন, সাতক্ষীরার সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অবস্থা খুবই খারাপ। এখানে যে পরিমাণ দুস্থ শিল্পী আছে সে পরিমাণ সহায়তা আসেনি। শিল্পকলার পাশাপাশি, আমার ব্যক্তিগত এবং জোটের পক্ষ থেকেও শিল্পীদের সহায়তা দিয়েছি।

শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক শেখ মুশফিকুর রহমান মিল্টন বলেন, কয়েক দফায় দুস্থ শিল্পীদের ১০০ জনকে সহায়তা দেয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি ৭০ জনকে কাউকে ১ হাজার, কাউকে ২ হাজার, কাউকে ৩ হাজার টাকাও দেয়া হয়েছে। তবে সবাইকে সহায়তা দেয়া সম্ভব হয়নি।

আগামীনিউজ/এএইচ 

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে