Dr. Neem on Daraz
Victory Day

অন্তঃসত্ত্বা হনুফা বেগমের হত্যাকারী গ্রেফতার


আগামী নিউজ প্রকাশিত: জুন ২৮, ২০২০, ০৭:২৮ পিএম
অন্তঃসত্ত্বা হনুফা বেগমের হত্যাকারী গ্রেফতার

সংগৃহীত ছবি

ঢাকা: ঢাকার আশুলিয়ার বাগানবাড়ী এলাকায় পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা নারী হনুফা বেগম (২৮) হত্যার মূলহোতাকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। এর নাম মো. খোরশেদ আলম ওরফে মামুন ওরফে আরমান হোসেন (২৭)। এ সময় ভুক্তভোগীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন, স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ ১৩ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। রোববার (২৮ জুন) কারওয়ান বাজারের র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তত্য জানান র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক লে: কর্ণেল শাফী উল্লাহ বুলবুল।

তিনি  জানান,ভিকটিম হনুফা বেগম ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানাধীন জিরাবো বাগান বাড়ী এলাকায় তার ছোট ভাই রুহুল আমিন এর বাড়ি দেখাশোনা করে। ভিকটিমের ছোট ভাই রুহুল আমিন বিদেশে থাকে। গত ২০ জুন  সকাল অনুমান ১০ টার সময় হনুফার বড় বোন তার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তা বন্ধ পায়। পরবর্তীতে ওই বাসার আরেক ভাড়াটিয়া ছাকিয়া’কে ফোন দিয়ে হনুঢার সাথে কথা বলিয়ে দেয়ার কথা বললে ওই ভাড়াটিয়া রুমে গিয়ে হনুফা বেগমের মরদেহ দেখতে পায়। পরবর্তীতে ভিকটিমের বড় ভাইসহ তার আত্মীয় স্বজনরা উক্ত বাসায় এসে জানতে পারে যে অজ্ঞাতনামা আসামী ভিকটিমকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

এই হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহতের বড় ভাই মোঃ রনি (৩৬) বাদী হয়ে ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলা হওয়ার পরেই হত্যাকান্ডের প্রেক্ষিতে র‌্যাব-১ তাৎক্ষনিকভাবে হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে দ্রুততার সাথে ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।

এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব-১, উত্তরা, ঢাকা এর একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদ ও তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে জানতে পারে যে, এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত ও একমাত্র আসামী লক্ষীপুর জেলার রামগতী থানাধীন চর আফজাল এলাকায় অবস্থান করছে। পরবর্তীতে প্রাপ্ত সংবাদের ভিত্তিতে রোববার (২৮ জুন) সকাল সাড়ে ৫টার দিকে অভিযান পরিচালনা করে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত মূল আসামী মোঃ খোরশেদ আলমতে গ্রেফতার করে। এসময় আসামীর কাছ থেকে ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন এবং স্বর্ণের চেইন ও কানের দুল উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে খোরশেদ জানায়, সে পেশায় একজন গার্মেন্টসকর্মী। সে গত ৫ জুন ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানাধীন জিরাবো বাগান বাড়ী এলাকার রুহুল আমিন মীরার বাসায় গার্মেন্টসকর্মী পরিচয় দিয়ে বাসা ভাড়া নেয়। সে পেশায় গার্মেন্টসকর্মীর আড়ালে মূলত  চুরি, ছিনতাই, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত ছিল। ভিকটিমের কাছে বিল্ডিং মেরামত ও রং করার জন্য তার কাছে নগদ কিছু টাকা আছে বলে জানতে পারে। এছাড়াও ধৃত আসামী ভিকটিমের কাছে থাকা স্বর্ণালঙ্কার ও মোবাইল ফোন দেখতে পায়। নগদ টাকা ও স্বর্ণলঙ্কার ছিনিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে সে ভিকটিমকে টার্গেট করে। পরে ২০ জুন সকাল আনুমানিক ৯ টার সময় পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আসামী ভিকটিমকে কৌশলে ফাঁকা একটি রুমে নিয়ে যায় এবং ভিকটিমকে তার নিজের পায়জামার ফিতা পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে তার কাছে থাকা নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার ও মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে যায়।

আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায় যে, সে ইতিপূর্বে বিভিন্ন এলাকায় আলাদা আলাদা নাম-ঠিকানা ব্যবহার করে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে  কৌশলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তেকে নগদ অর্থসহ মূল্যবান দ্রব্যসামগ্রী নিয়ে পালিয়ে যায়। সে ইতিপূর্বে চট্টগ্রাম, ভোলা, কুমিল্লা, গাজীপুর, রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন নাম ও ঠিকানা ব্যবহার করে একই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জানায়। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিকট গ্রেফতার এড়ানোর লক্ষ্যে ভিন্ন ভিন্ন পরিচয় দিয়ে আসছে।

এই হত্যাকাণ্ড সে নিজে ঘটিয়েছে এবং এই হত্যাকান্ডের সাথে অন্য কেউ জড়িত নয় বলেও সে জানায়। তারর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানায় র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক।

আগামীনিউজ/আরিফ/জেএস

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে