Dr. Neem on Daraz
Victory Day

ঠাকুরগাঁওয়ে সুক নদীর বুড়ির বাঁধে চলছে মাছ ধরার মহাউৎসব


আগামী নিউজ | ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি প্রকাশিত: অক্টোবর ১৮, ২০২১, ০৯:২৮ পিএম
ঠাকুরগাঁওয়ে সুক নদীর বুড়ির বাঁধে চলছে মাছ ধরার মহাউৎসব

ছবিঃ আগামী নিউজ

ঠাকুরগাঁওঃ জেলার সদর উপজেলার সুক নদীর বুড়ির বাঁধে চলছে মাছ ধরার মহাউৎসব । প্রতি বছর কার্তিক মাসের প্রথমদিন এ উৎসব হয়।

সোমবার (১৮অক্টোবর) সকাল ৮টার দিকে ঠাকুরগাঁও জেলার সদর উপজেলার আক্চা ও চিলারং ইউনিয়নের মাঝামাঝি সুক নদীর উপর নির্মিত বুড়ির বাঁধ এলাকায় মাছ ধরতে  অংশ নেয় বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।

ঠাকুরগাঁও জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো: খালিদুজ্জামান বলেন, ৫০-৬০ একর এলাকাজুড়ে সুক নদীর উপর নির্মিত বুড়ির বাঁধ মৎস্য ক্ষেত্র। সারা বছর কাউকে এখানে মাছ ধরতে দেওয়া হয় না। শুধু জমানো পানি ছেড়ে দেওয়ার পর এ সময়ই মাছ ধরার অনুমতি দেওয়া হয়। সরেজমিনে দেখা যায়, মাছ ধরতে জাল, খইয়া জাল, পলো ও মাছ রাখার খালুই নিয়ে গ্রাম ও শহর সহ বিভিন্ন এলাকার হাজারো মানুষ মাছ ধরার উৎসবে যোগ দেয়। । যাদের মাছ ধরার সরঞ্জাম নেই তারাও মাছ ধরছেন হাত দিয়ে। মাছ ধরা দেখতে এ সময় নদীর চারপাশে ভিড় জমায় অসংখ্য মানুষ।এ মাছধরা  চলে সপ্তাহ জুরে।

পঞ্চগড় থেকে ঠাকুরগাঁও জেলার বুড়িরবাঁধ এলাকায় মাছ ধরতে এসেছেন রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, “এর গত বছরও এখানে এসেছিলাম মাছ ধরতে, ঠিক এবারও এসেছি।“আমার সঙ্গে এলাকার আরও কয়েকজন এসেছে। ভোর ৬ টা থেকে দুপর ২ টা পর্যন্ত আমরা প্রায় ১৪ কেজি বিভিন্ন জাতের মাছ ধরেছি।” ঠাকুরগাঁও ভেলারহাট থেকে মাছ ধরতে এসে সাদেকুল ইসলাম বলেন, “চাবিজাল ও পোলই নিয়ে আমি ও আমার ছোট ভাই মেহেদি এসেছি সকাল ৭ টার দিকে বুড়িরবাঁধ এলাকায় মাছ ধরতে। ১১ টা পর্যন্ত আমরা দুইজন মিলে বোয়াল, শোল, জামানি রুই, ট্যাংরা, পুটি, শিং, তেলাপিয়া সহ বিভিন্ন জাতের প্রায় ৭ কেজির মত মাছ ধরেছি। ঠাকুরগাঁও জেলার সদর উপজেলার রুহিয়া এলাকার বদিরুল ইসলাম বলেন, এ বছর এই বাঁধে গতবারের তুলনায় মাছের পরিমাণ কম। জমানো পানি ছেড়ে দেওয়ার পর বিভিন্ন এলাকার মাছপ্রেমিরা দলে দলে এসেছে মাছ ধরতে। বুড়িরবাঁধ এলাকা মাছ ধরার উৎসবে পরিণত হয়েছে।

বুড়িরবাঁধ এলাকায় মাছ কিনতে আসা মাছের পাইকার রমজান আলী বলেন, অনেক মাছপ্রেমি মাছ ধরছেন, অনেকেই আবার মাছ ধরে বিক্রি করছেন। যারা মাছ বিক্রি করছেন তাদের কাছ থেকে কমমূল্যে এখান থেকে মাছ কিনতে পারছি, পরে এগুলো মাছ বাজারে বিক্রি করব। ঠাকুরগাঁও শহর থেকে মাছ কিনতে এসেছেন কাসেম আলী। তিনি বলেন, কাল রাতেই শুনেছি বুড়িরবাঁধে মাছ ধরা হবে। তা শুনেই সকালে ছেলেকে নিয়ে চলে এসেছি মাছ কিনতে। এখান থেকে বিভিন্ন দেশী জাতের ২ কেজি মাছ কিনলাম ৫০০ টাকায়। সাথে রুই মাছ কিনেছি ৩ কেজি, সেগুলোর দাম রেখেছে ৫০০ টাকা। এরকম মাছ ধরার দৃশ্য এর আগে কখনও চোখে পড়েনি।।

 জানাযায় যে ১৯৮০ সালের দিকে শুষ্ক মৌসুমে এ অঞ্চলের কৃষি জমির সেচ সুবিধার জন্য এলাকায় একটি জলকপাট নির্মাণ করা হয় । আর বাধটির দেখভাল করে আক্চা ও চিলারং ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি)।

এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও জেলার সদর উপজেলার চিলারং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আইয়ুব আলী বলেন, প্রত্যেক বছরের কার্তিক মাসের প্রথম দিনে বুড়িরবাঁধের জমানো পানি ছেড়ে দেওয়া হয় এবং মাছ ধরার জন্য উন্মুক্ত করা হয়। পানি ছেড়ে দেয়ার পর পুরো এলাকা হয়ে উঠে মাছ ধরার উৎসবে। বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ এসেছে এখানে মাছ ধরতে। মাছ ধরার দৃশ্য দেখে মনকে ছুঁয়ে যায়।

আগামীনিউজ/শরিফ 

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে