Dr. Neem on Daraz
Victory Day

জুমচাষ ও ধান রোপনে ব্যস্ত সময় কাটছে পাহাড়ী জনগোষ্ঠীর


আগামী নিউজ | নিউটন চাকমা, রাঙামাটি জেলা প্রতিনিধি প্রকাশিত: জুলাই ২৪, ২০২১, ০৭:১২ পিএম
জুমচাষ ও ধান রোপনে ব্যস্ত সময় কাটছে পাহাড়ী জনগোষ্ঠীর

ছবিঃ আগামী নিউজ

রাঙামাটিঃ পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত পাহাড়ী জনগোষ্ঠীদের আষাঢ় মাসটি এলে পাহাড়ে জুমচাষ ও ধান্যজমিতে ধান রোপনসহ পাহাড়ের বিভিন্ন ফলজদ্রব্য রোপনের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন এ অঞ্চলের পাহাড়ী জনগোষ্ঠীরা।

তারা এ অঞ্চলে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে যুগের পর যুগ চাষাবাদ করে আসছেন।  বাংলাদেশের একমাত্র পার্বত্য চট্টগ্রামেই জুমচাষ করা হয়। এখানে ধান চাষের পাশাপাশি আদা, হলুদ, কঁচু, ধনিয়া, মরিচ, পাহাড়ী অঞ্চলের বিভিন্ন রকমের সবজি চাষ করা হয়।

জুমচাষের এক পাহাড়ী জনগোষ্ঠীর সঙ্গে আলাপকালে আগামী নিউজের প্রতিবেদককে জানান, পার্বত্য রাঙামাটিসহ গোঠা পার্বত্য চট্টগ্রামের এখন জুমচাষ ও জমিতে ধান রোপনের সময়। কাজেই এ পুরো আষাঢ় মাসটি একমাত্র পাহাড়ী অঞ্চলে জুমচাষের ও আবাদী চাষাবাদের সময়। আগামী মাসে এ জুমচাষটি চাষাবাদ করলেও ফলন সুবিধা পাওয়া যায় না। সেজন্য আষাঢ় মাসটি হলো একমাত্র জুমচাষের উপযুক্ত সময়।

এদিকে আরেক পাহাড়ী আদিবাসী বলেছেন, পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসরত পাহাড়ীদের পাশাপাশি অউপজাতীয় কিছু সংখ্যক জুমচাষের শিক্ষা নিয়ে তারাও কিছু কিছু জায়গায় আদা, হলুদ চাষাবাদ করছেন। তিনি আরো বলেন, গত এপ্রিল-মে মাসটি পাহাড়ের জুমচাষের জন্য আগাম জঙ্গল কেটে ফেলা হয়। তারপর কয়েকদিন পর তা আগুনে পুড়ানো হয়। তাই জুলাই- আগস্ট মধ্যবর্তী মাসটি চাষের উপযোগী হিসেবে ধরা যায়। সেজন্য অত্র অঞ্চলে সময়োপযোগী ভাবে চাষাবাদ করা হয়ে থাকে বলে জানান।

অপরদিকে পাহাড়ে শতবছর বসবাসকারী জাতিসত্ত্বা অনন্ত তংচংঙ্গ্যা জানান, দীর্ঘ শতবছর ধরে বসবাসরত তংচংঙ্গ্যা জনগোষ্ঠীরা অধিকাংশ পাহাড়ী এলাকায় জুমচাষ করে আসছে। তারা অধিকাংশ ধান, আদা, হলুদ, তুলা, কঁচু ও বিভিন্ন জাতের ফলজদ্রব্য পরিশ্রমের মধ্যে দিয়ে চাষাবাদ করছেন।  তাদেরকে ফলোআপ করে অন্যান্য পাহাড়ী জনগোষ্ঠীরা দেখেই এ জুমচাষে  আগ্রহী জাগে। সে থেকেই অত্র অঞ্চলে জুমারী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে পাহাড়ী জনগোষ্ঠীদেরকে।

এবিষয়ে রাঙামাটি কৃষি কর্মকর্তার সাথে কথা হলে তিনি জানান, পার্বত্য অঞ্চলে একমাত্র জুমচাষের উপযোগী স্থান। সেজন্য এখানে কৃষিকাজে চাষাবাদকারীকে কৃষি অফিস থেকে যথেষ্ট ভাবে সহায়তা করা হয়। তাদেরকে বিভিন্ন ভাবে কৃষি অফিস সবসময় তাদের সাথে কাজ করছে।  তবে এ জুমচাষের জন্য পাহাড়ে বনজ সম্পদ (জঙ্গল) আগুনে পুড়ানোর কারনে বনজ সম্পদ উজাড় হয়ে প্রাকৃতিক বনজ সম্পদ ক্ষতি হচ্ছে, অন্যদিকে জঙ্গলে বসবাসরত পশু-পাখিদের নিরাপদে ঠাঁইয়ের স্থান সম্মুখীন হচ্ছে। সেক্ষেত্রে পাহাড়ী অঞ্চলে বনজ সম্পদ উজাড় করে আগুন দিয়ে  পুড়ানোর জন্য প্রশাসন যথেষ্ট সজাগ রয়েছে। তাদেরকে জনসচেতনতার বৃদ্ধি করতে কৃষি বিভাগ আগামীতে  মাঠ পর্যায়ে কাজ করার সিদ্ধান্তের কথা জানান এ কৃষি কর্মকর্তা।

পাহাড়ী অঞ্চলে জনগোষ্ঠীদের পাহাড়ে জুমচাষ ও ধান চাষে চাষীরা ব্যস্ত  সময়  কাঁটাচ্ছেন। তারা ভোর বেলা গুম থেকে উঠে রান্না করে সারাদিন পাহাড়ে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন রকমের ফলজদ্রব্য রোপনসহ ধান, আদা, হলুদ, শাকসবজি চাষাবাদ কাজে রাত্রিযাপন করছেন।

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে