Dr. Neem on Daraz
Victory Day

ঝিনাইদহের ত্রাস স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা আবু সাঈদ বিশ্বাস


আগামী নিউজ | নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৩, ২০২১, ১২:৫২ এএম
ঝিনাইদহের ত্রাস স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা আবু সাঈদ বিশ্বাস

স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা আবু সাঈদ বিশ্বাস। ছবিঃ সংগৃহীত

ঝিনাইদহঃ ঝিনাইদহ শহরের নানা অপকর্মে জড়িত ও ক্ষমতার দাপটে জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতিতে একক প্রভাব বিস্তার করে নেতৃত্ব কেড়ে নেয়া জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ বিশ্বাস চান নৌকার প্রতিকে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন।

স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ঝিনাইদহ জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ বিশ্বাস এক সময়ে ঝিনাইদহ পৌরসভার মেয়র সাইদুল করিম মিন্টুর ঘনিষ্ঠ সহচর ও ডান হাত বলে পরিচিত ছিল। সে সময়ে ঝিনাইদহ শহরের আরাপপুর বাস স্টান্ড থেকে শুরু করে শহরে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে চলেছিল। পরবর্তীতে ঝিনাইদহ বাস মিনিবাস মালিক সমিতির পদ পদবী দ্বন্দ্বে মেয়রের সঙ্গে আবু সাঈদ বিশ্বাসের দূরত্বের সৃষ্টি হলে সে বর্তমান এমপি গ্রুপের যোগদান করে আরও ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে এলাকায় বিভিন্ন ক্যাডার পোষা, কিশোরগ্যাং এর নেতৃত্ব দেয়া থেকে শুরু করে আরও অপকর্মে লিপ্ত হয়। মেয়রের সাথে দ্বন্দ্বের পরে মেয়র গ্রুপের সাইফুলকে ঝিনাইদহ থেকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে বিতারিত করে। বর্তমান সাইফুল এলাকায় প্রবেশ করতে পারছে না সাঈদের ভয়ে। এই সাইফুলও এক সময়ে ঝিনাইদহে শহরের ত্রাস বলে পরিচিত ছিল।

ঝিনাইদহ জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, রাতের আঁধারে স্থানীয় এমপির ঘনিষ্ঠ সহচর হওয়ায় আবু সাঈদ ক্ষমতার দাপটে ঝিনাইদহ জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে ১৮ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করে। সেই কমিটির শপথ বাক্য পাঠ করান ঝিনাইদহ-২ আসনের এমপি তাহজীব আলম সিদ্দিকী সমি। তবে পরবর্তীতে কমিটিকে ঘিরে দ্বন্দ্ব সংঘাতের আশঙ্কায় নতুন করে নির্বাচন দিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রশাসক নিয়োগ করে। এরপর প্রশাসক নিয়োগ দেয়ায় আবু সাঈদ হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করে। সে মামলা এখনও চলমান।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামীলীগের একাধিক নেতা জানান, আবু সাঈদ বিশ্বাসের ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ত্রাসের রাজত্ব নতুন নয়। যখন সে যে নেতার পিছে থাকে তখনই তার ক্ষমতা যেন সাঈদের নিজের ক্ষমতা হয়ে যায়। এখানে মূলত বড় দ্বন্দ্ব জেলা বাস মিনিবাস সমিতির নেতৃত্ব নিয়ে। এছাড়াও ক্ষমতার দাপট দেখাতে ক্যাডার পোষা, কিশোর গ্যাং নেতৃত্ব দেয়া নতুন কিছু নয়।

এদিকে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ৮ নং পাগলাকানাই ইউনিয়ন পরিষদের আগামী নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী মোঃ আবু সাঈদ। পাগলাকানাই ইউনিয়নের একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তার বাবা পাগলাকানাই ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম মহিউদ্দিন বিশ্বাস। তিনি এখানে নিষ্ঠার সঙ্গে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে গেছেন। তবে তার মত মানুষের ছেলে এভাবে রাজনীতিতে এসে এমন অপকর্মে জড়িয়ে পড়বে তা ভাবা যায় না। তবে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তাকে কেউ চাই না। কারণ এপদে সে বসলে বঞ্চিত হবে ইউপিবাসী।

তবে এ বিষয়ে জানতে আবু সাঈদ বিশ্বাস আগামী নিউজকে বলেন, এ অভিযোগ ভিত্তিহীন। জেলা শহরে ত্রাসের রাজত্ব আমি নয় বরং মেয়র সাইদুল করিম মিন্টু করছে। তিনি ক্যাডার পোষা থেকে শুরু করে এহেন কোন অপকর্ম নেই যা করেন না। তবে এক সময়ে মেয়রের সাথে রাজনীতির বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান এবং জেলা বাস মালিক সমিতির নির্বাচন নিয়ে মেয়রের সাথে দ্বন্দ্বের বিষয়ে কোন বক্তব্য দেন নি তিনি। স্বেচ্ছালীগের নেতা হওয়ার পর তার দাপট দেখানোর প্রসঙ্গেও তিনি কোন সদুত্তর দেননি। পরে কথা হবে বলে ফোন কেটে দেন।

তবে তার অভিযোগের বিষয়ে ঝিনাইদহ পৌরসভার মেয়র সাইদুল করিম মিন্টুর মুঠোফোনে একাধিক বার ফোন এবং ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

জেলা আওয়ামীলীগের শীর্ষ এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বর্তমান এমপির ছত্র ছায়ায় এবং স্বেচ্ছাসেবকলীগের নেতা হবার সুবাদে ও  বাস মিনিবাস মালিক সমিতিতে ক্যাডার দিয়ে ক্ষমতা দখল করা থেকে শুরু করে এহেন কোন অপকর্ম নাই যা এই সাঈদ করে নাই। 

বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, যদি কেউ স্বেচ্ছাসেবকলীগের পদে থেকে কোন ধরণের অপকর্মে জড়ায় তাহলে তাকে কোন ভাবেই প্রশ্রয় দেয়া হবে না, তার বিরুদ্ধে সাংগঠনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

 

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে