Dr. Neem on Daraz
Victory Day

পুত্রের আশায় ৮ কন্যা!


আগামী নিউজ | ডেস্ক রিপোর্ট প্রকাশিত: অক্টোবর ১৯, ২০২০, ১২:১২ পিএম
পুত্রের আশায় ৮ কন্যা!

সংগৃহীত

কুড়িগ্রামঃ সাইফুর রহমান ও ফাতেমা  আক্তার। ফাতেমার বাড়ি কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার হাসনাবাদ ইউনিয়নের দক্ষিণ নওদাপাড়া গ্রামে। আর সাইফুরের বাড়ি ফুলবাড়ী উপজেলার ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের নগরাজপুর গ্রামে। ২০ বছর আগে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়।

বিয়ের পর তাদের ঘরে আসে পাঁচ কন্যা সন্তান। পুত্রের আশায় আবারও গর্ভধারণ। কিন্তু বিধি বাম, এবারও পুত্র সন্তান হলো না। গেলো ১২ অক্টোবর একসঙ্গে জন্ম নিয়েছে তিন মেয়ে। তাইতো আট মেয়ের ভবিষ্যত নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় মা ফাতেমা। একসঙ্গে তিন সন্তানের জন্ম দিয়ে এক সপ্তাহ ধরে ফাতেমা অসুস্থ বলে জানিয়েছেন তার স্বজনরা।

দিনমজুর সাইফুর-ফাতেমা দম্পতির তিন কন্যা শিশুর ভরণ-পোষণের সামর্থ্য না থাকায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে শিশু তিনটি দত্তক দেয়ার কথা জানিয়ে পোস্ট দিয়েছিলেন তাদের এক আত্মীয়।

জানা যায়, বড় মেয়েকে এক বছর আগে বিয়ে দিয়েছেন। বাকি চারজনের একজন নবম শ্রেণি, একজন সপ্তম শ্রেণি এবং দুইজন শিশু শ্রেণিতে পড়ে। হতদরিদ্র পরিবারে পাঁচ মেয়েকে নিয়ে টানাপড়নের মধ্যে দিন কাটলেও একটি ছেলে সন্তানের আশায় আবারও গর্ভধারণ করেন ফাতেমা।

ফাতেমার মা রহিমা বেগম বলেন, ‘পুত্রের আশায় একে একে ৫ মেয়ে হওয়ার পর এবার একসঙ্গে তিন মেয়ের জন্ম হইছে। ফাতেমার শরীর ও মন দুটাই খারাপ। এতগুলা বাচ্চা মানুষ করবো কেমন করি!’

ফাতেমার মামা মেহের আলী জানান, জন্মের পর তিন শিশুর শারীরিক অবস্থা ভালো থাকলেও ফাতেমার অবস্থা নাজুক হয়ে পড়েছে। কথা বলার মতো অবস্থায় নেই। পল্লি চিকিৎসক দেখিয়ে চিকিৎসা নিলেও তা পর্যাপ্ত নয়। অর্থাভাবে উন্নত চিকিৎসা নেয়ার সামর্থ্য নেই তার। ছেলের আশা করলেও একসঙ্গে তিন কন্যা সন্তানের জন্ম হওয়ায় ফাতেমার মন ভালো নেই।

তার স্বামীও নাখোশ, অনেকটা অসংলগ্ন কথাবার্তা বলছে। এতগুলো সন্তানের ভরণ পোষণ নিয়ে তারা চিন্তিত।  তাই সদ্য জন্ম নেয়া তিন মেয়েকে দত্তক দেয়ার চিন্তা করে ফেসবুকে পোস্ট দেয়া হয়েছিল। তবে আপাতত সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়েছে। ফাতেমা সুস্থ হওয়ার পর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

সাইফুর রহমান বলেন, ‘আল্লাহ যা করছে তা ভালো হইছে। কখনও কামলা দিয়া আবার কখনও শাক-সবজি বিক্রি করি সংসার চালাই। কষ্ট করি হইলেও বাচ্চাদের মানুষ করার চেষ্টা তো করা লাগবে।’

নাগেশ্বরী উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা জিন্নাতারা ইয়াছমিন গণমাধ্যমেক বলেন, ‘আট সন্তানের জননী হওয়ায় নীতিমালা অনুযায়ী তাকে মাতৃত্বকালীন ভাতা দেয়া সম্ভব নয়। তার স্বামীর বাড়ি ফুলবাড়ী উপজেলায় হওয়ায় তাকে ওই উপজেলায় ভিজিডি প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।’

নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নুর আহমেদ মাছুম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বিষয়টি আমি অবহিত হয়েছি। ওই নারী ফুলবাড়ী উপজেলার স্থায়ী বাসিন্দা। তারপরও আমাদের উপজেলা প্রশাসন থেকে তার জন্য সহযোগিতার ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’

ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তৌহিদুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘তিনি যেহেতু এখন নাগেশ্বরী উপজেলায় রয়েছে তাই যদি তার স্বাস্থ্যগত বিষয়ে কোনও ব্যবস্থা নিতে হলে সেখানকার প্রশাসন নেবে। আর সে ফুলবাড়ীতে তার বাড়িতে ফিরলে তাকে যদি কোনও সরকারি সুবিধার মধ্যে নিয়ে আসা যায় আমরা সে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’

আগামীনিউজ/এএস

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে