Dr. Neem on Daraz
Victory Day

দুপচাঁচিয়ায় ভরাট হচ্ছে ব্রিজ-কালভাট, ভয়াবহ জলাবদ্ধতার আশংকা


আগামী নিউজ | উপজেলা প্রতিনিধি, দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) : প্রকাশিত: মে ২১, ২০২২, ০৬:৫৮ পিএম
দুপচাঁচিয়ায় ভরাট হচ্ছে ব্রিজ-কালভাট,  ভয়াবহ জলাবদ্ধতার আশংকা

ছবিঃ আগামী নিউজ

বগুড়াঃ জেলার দুপচাঁচিয়া উপজেলায় মাটিভরাটের কারনে একের পর এক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে  ব্রিজ-কালভাট দ্বারা পানি নিষ্কাশনের পথ। ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই বসতি এলাকা এবং ফসলের মাঠজুড়ে সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। ব্রিজ-কালভাটে  মাটিভরাট করে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করার প্রবনতা রুখতে না পারলে দু-এক বছরের মধ্য ভয়াবহ জলাবদ্ধতার আশংকা করছে এলাকাবাসী।

অনুসন্ধান বলছে, দুপচাঁচিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বাধাহীন পানি প্রবাহের জন্য  সড়কে এবং রাস্তায় ব্রিজ নির্মান এবং কালভাট স্থাপন করা হয়। বর্ষা মৌসুমে প্রবল বৃষ্টিপাত হলেও সড়ক ও রাস্তায় বাধাগ্রস্ত পানি ব্রিজ এবং কালভাট দিয়ে অতি সহজেই ইরামতি খাল এবং নাগর নদে প্রবাহিত হত। ফলে বসতবাড়ি এবং আবাদি জমি থাকত জলাবদ্ধমুক্ত।

কিন্তু কয়েক বছর ধরে ব্যক্তিস্বার্থে এবং অপরিকল্পিত বাড়ি নির্মানের কারনে পানি প্রবাহের পথ বন্ধ হওয়ায় অকেজো হয়ে পড়েছে শতকরা ৬০ ভাগ ব্রিজ-কালভাট। আবার অনেক মাঝারি ব্রিজ-কালভাটের পানি প্রবেশ-মুখ মাটি দিয়ে ভরাট করা হয়েছে। মাটি ভরাট করার প্রবনতায় বেশ এগিয়ে রয়েছেন প্রভাবশালীরা।

দুপচাঁচিয়া উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়ন পরিষদের ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট পেশের উন্মুক্ত সভায় বিভিন্ন অতিথিদের বক্তৃতায় উঠে আসে ভয়াবহ জলাবদ্ধতার আশংকা।

১৮ মে অনুষ্ঠিত ওই সভায় গোবিন্দপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন মল্লিক বলেন, আমার জীবনে এবার প্রথমবারের মত দেখলাম পাকাধান জমিতে ফেলে রেখে চলে এসেছে কৃষক। জলাবদ্ধ জমিতে পাকাধান এমনভাবে নষ্ট হয় গেছে যে কৃষক তা সংগ্রহ করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। ঝড় বৃষ্টিতে যতটা না ক্ষতি হয়েছে, তার চেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে জমি থেকে পানি নিষ্কাশন হতে না পেরে।

তিনি আরও বলেন, ভয়াবহ জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষা পেতে এখনি সর্বস্তরে ব্যাপক আলোচনা হওয়া উচিত।

দুপচাঁচিয়া উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহবুবা নাসরিন রূপা বলেন, গ্রাম এলাকায় অনেকেই ড্রেনেজ ব্যবস্খা না রেখেই অপরিকল্পিত বাড়ি নির্মান করছেন। পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করে নিজেরা দূর্ভোগের শিকার হচ্ছে। বসতবাড়ি এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে এখন সামষ্টিক দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

ওই সভায় দুপচাঁচিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ফজলুল হক প্রাং বলেন, দুপচাঁচিয়া উপজেলার প্রায় প্রতিটি গ্রামেগঞ্জে অপরিকল্পিত বাড়িঘর নির্মানের কারনে ইতোমধ্য নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করে বাড়িঘর নির্মানের ফলে এখন বিভিন্ন এলাকাজুড়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। জলাবদ্ধতায় ক্ষতির শিকার হয়ে জনগণ ব্যাপকভাবে অভিযোগ তুলছে এবং ঝগড়া বিবাদেও লিপ্ত হচ্ছে ।

তিনি আরও বলেন, সরকার গ্রামে শহরের সকল সুযোগ সুবিধা সৃষ্টির লক্ষ্যে গ্রামাঞ্চল পরিবর্তনের ধারায় এগিয়ে নিতে চান। কিন্তু নিজেদের স্বার্থে পানি নিষ্কাশনের ড্রেনেজ ব্যবস্থা বন্ধ করে এবং রাস্তা না রেখে অনেকেই অপরিকল্পিতভাবে বাড়িঘর নির্মান করছেন। এতে যেমন রাস্তা ও ড্রেন নির্মানে সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, তেমনি নাগরিকরা হচ্ছে সুবিধাবঞ্চিত।

দুপচাঁচিয়া উপজেলার সচেতন মহলের দাবি, বিভিন্ন এলাকায় ভরাট হয়ে যাওয়া ব্রিজ,কালভাট এবং ড্রেনগুলো বিশেষ জরিপের মাধ্যমে শনাক্ত করে সেগুলো পুণরায় ভরাটমুক্ত করার ব্যবস্থা গ্রহন করা হোক।

দেওয়ান পলাশ/এসএস

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে