Dr. Neem on Daraz
Victory Day

আটক হয়নি চান্দুটিয়ায় কিশোরীর আত্মহত্যায় প্ররোচনাকারী রকি


আগামী নিউজ | বিল্লাল হোসেন, যশোর জেলা প্রতিনিধি প্রকাশিত: মে ৭, ২০২১, ০৮:৫৩ পিএম
আটক হয়নি চান্দুটিয়ায় কিশোরীর আত্মহত্যায় প্ররোচনাকারী রকি

ছবি সংগৃহীত

যশোরঃ সদর উপজেলার চান্দুটিয়ায় মাদ্রাসা ছাত্রী খুশিকে (১৩) আত্মহত্যায় বাধ্যকারী রকিকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। এদিকে অভিযোগ উঠেছে, ঘটনা ভিন্নখাতে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে রকির পরিবার। বিভিন্ন মহলে দেন দরবারও চালিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয়ভাবে তারা প্রভাবশালী হওয়ায় ঘটনাটি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার জন্য ছাত্রীর পরিবারকে শাসানো হচ্ছে। ফলে তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।  

খুশির পিতা ইকরামুল ওরফে ইকরাম সরদার জানান, রকির কারণে খুশি আত্মহত্যা করেছে বিষয়টি জানাজানি হওয়ার থেকে পিতা রফিকুল ইসলাম ও বড় ভাই সুজন হোসেন দৌড়ঝাঁপ শুরু করে। তাদের কোনঠাসা করার জন্য এলাকার একটি পক্ষকেও ম্যানেজ করেছে তারা। ইকরাম আরও জানান, সুজন প্রকাশ্যে বলে বেড়াচ্ছে তাদের কিছু করতে পারবো না। প্রভাব ও টাকা দিয়েই সব কিছু ম্যানেজ করে নিবে তারা। ফলে মেয়ের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার জন্য আমাকে শাসানো হচ্ছে। আমি গরিব মানুষ বলে কি বিচার পাবোনা।

অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় একটি চক্রের সাথে রকির পরিবারকে মদদ দিচ্ছে তার বড় ভাই সুজনের শ্বশুর চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের সাজিয়ালী গ্রামের খুনসহ একাধিক মামলার আসামি আবুল কালাম। আত্মহননকারী খুশির স্বজনরা জানিয়েছেন, ঘটনার পর থেকে রকি গা ঢাকা দিয়েছে। তবে খুশির ব্যবহৃত মুঠোফোনে দুই দিন কল করেছে। কিন্তু তার ভাবি রিসিভ করার পর ভুল নম্বর বলে লাইন কেটে দেয়। খুশি মারা যাওয়ার পরও কি কারণে রকি তার মোবাইলে কল করেছে এটা তারা বুঝে উঠতে পারছেন না।

এলাকাবাসী জানিয়েছেন, রকিরা ৪ ভাই। তাদের সকলের বিরুদ্ধে নারী কেলেংকারীর অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু টাকা ও ক্ষমতার দাপটে বার বার তারা পার পেয়ে যায়। ৪ জনের মধ্যে বড় ভাই সুজন একাধিক মেয়েকে প্রেমে ফাঁসিয়েছে। সর্বশেষ প্রতিবেশী এক ছাত্রীর সাথে প্রেম প্রতারণা নিয়ে এলাকায় ব্যাপক তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়। আরেক ভাই সুমন একই গ্রামের এক স্কুল ছাত্রীকে বিয়ের প্রলোভনে দীর্ঘদিন মেলামেশা করে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিয়ে করেনি। এই নিয়ে দুই পরিবারের মাঝে এখনো দ্বন্দ্ব রয়েছে। তবে সুযোগ বুঝে বিদেশ পাড়ি জমায় সুমন। সুমনের ভাই তুহিন। সেও এলাকায় বখাটে হিসেবে পরিচিতি। তুহিন একই গ্রামের এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে শেষ পর্যন্ত প্রতারণা করে।

এলাকাবাসী জানায়, ওই মাদ্রাসা ছাত্রী তুহিনকে ভালোবেসে ৩ বার ঘর ছেড়েছে। শেষ পর্যন্ত বিয়ে না করে তাকেও ঠকানো হয়। এই পরিবারের কারণে অনেকেই অতিষ্ট হলেও ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না। যে কারণে তারা একের পর এক অপকর্ম করে পার পেয়ে গেছে। ভয়ে কেউ আইনের আশ্রয়ও নিতে পারেনি। ৪ ভাইয়ের মধ্যে ছোট রকিকে ভালোবেসে কিশোরী খুশির মৃত্যু নিয়ে স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক বিচারের দাবি জানিয়েছেন তারা। অন্যথায় তাদের রোষানলে পড়ে আরো অনেক মেয়ের সর্বনাশ হতে পারে।

এই বিষয়ে সাজিয়ালী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই সুকুমার কুন্ডু আগামী নিউজকে জানান, খুশি আত্মহত্যার ঘটনায় প্রথম অবস্থায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়। পরে জানতে পারি রকি তাকে করতে অস্বীকার করায় আত্মহত্যা করেছে। ঘটনার পর থেকে রকি পলাতক থাকার কারণে আটক করা সম্ভব হয়নি। তদন্তে ঘটনার সত্যতা মিললে রকিকে মামলায় আসামি করা হবে। এসআই সুকুমার কুন্ডু আরও জানান, লাশ উদ্ধারের সময় খুশির ঘর থেকে একটি চিরকুট জব্দ করা হয়। সেখানে রকিকে ঈঙ্গিত করে নানা ধরণের কথা লেখা রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত রোববার গভীররাতে নিজ ঘরে আড়ার সাথে ওড়না পেচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে খুশি। মৃত্যুর আগে সে নিজের খাতায় রকি ও তার ভালোবাসা নিয়ে বিভিন্ন কথাবার্তা লিখে যায়। চিরতরে ঘুমিয়ে যাওয়া নিয়েও একটি লাইন লেখে খুুশি।

আগামীনিউজ/এএস

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে