Dr. Neem on Daraz
Victory Day

লেখক মোস্তাক আহম্মেদের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন


আগামী নিউজ | মোক্তার হোসেন, গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২১, ০৬:২৩ পিএম
লেখক মোস্তাক আহম্মেদের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন

আগামী নিউজ

গাজীপুরঃ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবী জানিয়েছেন ব্লগার ও অনলাইন এ্যক্টিভিস্টরা। গাজীপুর হাইসকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দি মোস্তাক আহম্মেদের (৫৩) ময়না তদন্ত শেষে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনে তারা সাংবাদিকদের কাছে এ দাবী করেন।

শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে মোস্তাক আহম্মেদের ময়না তদন্ত শেষ হয়েছে।

গাজীপুর জেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ওয়াসিউজ্জামান চৌধুরী জানান, লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির ক্ষেত্রে মোস্তাক আহম্মেদের শরীরে দৃশ্যমান মেনশনেবল কিছু পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিস্তারিত জানা যাবে।

গাজীপুর মেট্রাপলিটন পুলিশের জয়দেবপুর থানার উপ পরিদর্শক(এসআই) সৈয়দ মো. বায়েজীদ জানান, কারাগারের পক্ষ থেকে মোস্তাকের মৃত্যুর ব্যাপারে জিএমপি’র জয়দেবপুর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা (নং ১৩) রুজু করা হয়েছে।

লেখক মোস্তাক আহমেদের চাচাতো ভাই ডা. নাফিছুর রহমান দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হাসপাতাল মর্গ থেকে মোস্তাকের লাশ গ্রহণ করেন।

এসময় তিনি বলেন, “তাঁর মরদেহ আমি নিজে দেখেছি। কোনো প্রকার সমস্যা আমার চোখে পড়েনি। ময়নাতদন্ত হয়েছে। প্রতিবেদন ছাড়া আমি এ ব্যাপারে কী বলব? আমাদের কোনো অভিযোগ নাই। আমরা কোনো মামলাও করব না।” শুক্রবার বাদ মাগরিব লালমাটিয়া সি ব্লকের মিনার মসজিদে তাঁর জানাযা অনুষ্ঠিত হবে। মরদেহ দাফন হবে আজিমপুর কবরস্থানে।

লেখক মোস্তাক আহম্মেদের সাথে একই মামমলায় অভিযুক্ত বর্তমানে জামিনে থাকা দিদারুল ভুঁইয়া সাংবাদিকদের সামনে কান্নাকন্ঠে জানান, ব্লগার এবং লেখক মোস্তাক ও কিশোরসহ তারা তিনজন প্রথমে কেরানীগঞ্জ জেলখানায় ছিলেন। ২০২০ সালের আগস্টে তাদেরকে কাশিমপুর কারাগারে নিয়ে আসা হয়। সেখানে তাদের প্রত্যেককেই আলাদা করে রাখা হয়। ফলে মোস্তাকের সাথে তার দেখা হয়নি। কিন্তু মোস্তাকের লাশ দেখতে হবে এটি কোনোদিনও ভাবিনি। মোস্তাকের মৃত্যু আমাদের দেখিয়ে গেল এ দেশে কেউ স্বাধীন নয়। মিডিয়ার সামনে কথা বলার কারণে হয়তো আরেকটি মামলা খেতে হবে।

বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহবায়ক ও গাজীপুরের অনলাইন এক্টিভিস্ট আনোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, তিনি ডিজটিাল নিরাপত্তা আইনের দুটি মামলায় অভিযুক্ত। দুই মামলায় দুইবার দীর্ঘদিন জেলে ছিলেন। “আজকে মোস্তাক চলে গেছে, কালকে তাঁর জায়গায় আমি আমাকে দেখতে পাচ্ছি। রাষ্ট্রীয় হেফাজতে থেকে মুক্ত চিন্তার মানুষ মারা যাওয়ার দায় রাষ্ট্র এড়িয়ে যেতে পারে না। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন মানুষের কল্যানে নয়, এ আইন বাতিল করা দরকার। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে মোস্তাকের মৃত্যু রহস্য উদঘাটন ও জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিতের দাবী জানাচ্ছি।”

গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. শাফী মোহাইমেন জানান, মৃত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। দৃশ্যত: তাঁর গায়ে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ভিসেরা পরীক্ষার জন্য হার্ট, লাঞ্চ, ব্রেইন এবং ক্যামিকেল পরীক্ষার জন্য পাকস্থলী, লিভার ও কিডনী থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এগুলো ঢাকায় পাঠানো হবে। আর ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন তৈরীর পর বিস্তারিত বলা যাবে।

প্রসঙ্গত, বৃহষ্পতিবার সন্ধ্যায় কারাগারের ভেতরেই মোস্তাক আহম্মেদ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে কারা হাসপাতালে নেয়া হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাত ৮টা ২০ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি নারায়ণগঞ্জের আড়াই হাজার থানার ছোট বালাপুর এলাকার মোঃ আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে।

তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটনের রমনা মডেল থানার ২০২০ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় নং ০২(০৫) অভিযুক্ত। ২০২০ সালের ৬ মে ঢাকা জেলে ও পরে ২৪ আগস্ট থেকে তিনি কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ছিলেন।

আগামীনিউজ/এএস

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে