Dr. Neem on Daraz
Victory Day

কুয়াকাটায় পৌরনির্বাচন নিয়ে প্রার্থীদের মনোনয়নযুদ্ধ


আগামী নিউজ | রাসেল কবির মুরাদ, জেলা প্রতিনিধি প্রকাশিত: নভেম্বর ১৮, ২০২০, ১০:২৩ এএম
কুয়াকাটায় পৌরনির্বাচন নিয়ে প্রার্থীদের মনোনয়নযুদ্ধ

আগামী নিউজ

পটুয়াখালীঃ   পর্যটন নগরী কুয়াকাটা পৌরসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে সরগরম হয়ে উঠেছে পৌর এলাকা।

সাগরপাড়ের এই জনপদের পৌর নির্বাচনকে ঘিরে বইছে উৎসবের আমেজ। তফসিলের ঘোষনার আগমুহুর্তে সব দলের ব্যানার ফেস্টুন ও পোস্টারে সমুদ্র উপকুল কুয়াকাটা সয়লাব।

সম্ভাব্য মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা দলীয় সমর্থন পেতে শুরু করেছেন দৌড়ঝাঁপ। সম্ভাব্য প্রার্থীরা রঙ্গিন ব্যানার ও পোষ্টার সাঁটানো এবং সমাজিক ও রাজনৈতিক অনুষ্টানে যোগদান করছেন। তারা তাদের প্রত্যাশার কথা প্রকাশ করছেন।

ইতোমধ্যে ভোটাররাও শুরু করেছেন চুলচেরা বিচার-বিশ্লেষণ। কাকে ভোট দিলে এলাকার উন্নয়ন হবে-এমন ব্যক্তিকেই নির্বাচিত করার পক্ষে বেশির ভাগ ভোটার অভিমত প্রকাশ করেছেন।

মেয়র প্রার্থীরা দলের টিকিট পেতে জেলা থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃস্থানীয়দের কাছে ধরনা দিচ্ছেন। সেই সাথে চালাচ্ছেন জোর গ্রুপিং-লবিং।

এদিকে কে কোন দলের মনোনয়ন পাবেন আর কে মেয়র হচ্ছেন ভোটারদের মাঝে এমন সব আলোচনা পর্যালোচনায় সরব হয়ে উঠেছে পৌর এলাকার চায়ের দোকানগুলো। শেষ পর্যন্ত দু’দলের কার মাথায় উঠবে দলীয় মনোনয়নের মুকুট সেটিই দেখার অপেক্ষায় কুয়াকাটা পৌরবাসী। ক্ষমতাসীন দলের একাধিক মেয়র প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে রয়েছে।

কুয়াকাটা পৌরসভা সুত্রে জানা গেছে, কুয়াকাটা পৌরসভা যাত্রা শুরু হয় ১৫ডিসেম্বর ২০১০সালে। ৯টি ওর্য়াড নিয়ে গঠিত পৌরসভার আয়তন ১২,৭৫ বর্গ কিলোমিটার। গ্রাম রয়েছে ২৫টি। বর্তমান জনসংখ্যা ৫০১২৭.০০জন। মোট ভোটার সংখ্যা ১২০০০ হাজার। ২০১১ সালে ৩৪ নং লতাচাপলী মৌজার ১১৪০দশমিক ৫৫একর জায়গা নিয়ে পৌরসভাটি পুর্নমর্যাদা লাভ করে। এরপর থেকেই পৌরসভার কার্যক্রম চলে আসছিল নির্বাচিত মেয়র দিয়ে। বর্তমানে ১২,৭৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বারো হাজার ভোটার নিয়ে হতে যাছে নির্বাচন।

স্থানীয় সূত্র ও আওয়ামীলীগ নেতা-কর্মীদের সূত্র মনে করে নৌকার মনোনয়ন পেলেই বিজয় সুনিশ্চিত এমন ধারণা থেকে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীরা মাঠে রয়েছেন। ফলে দলীয় মনোনয়ন পেতে মরিয়া সেইসব নেতারা পরস্পরের বিরুদ্ধে কাঁদা ছোড়াছুড়িসহ অভিযোগের পাহাড় গড়ছেন।

অন্যদিকে দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি এবারের কুয়াকাটা পৌর নির্বাচনে কৌশলী হয়ে মাঠে কাজ করবে বলে দলীয় সুত্রে আভাস মিলেছে।

এ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ থেকে হাফ ডজন নেতা দলীয় মনোনয়ন পেতে নানা তদবির চালাচ্ছেন। তারা হলেন নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী বর্তমান পৌর মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আ: বারেক মোল্লা, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান টিটু, কুয়াকাটা পৌর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি গাজী মো.ইউসুফ, সাংগঠনিক সম্পাদক ও পৌর কাউন্সিলর মো: শাহ আলম হাওলাদার এবং অপর সাংগঠনিক সম্পাদক বাবু অনন্ত মুখার্জী মাঠে রয়েছেন।

ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী ও নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে কয়েকটি বলয় তৈরী হয়েছে। দ্বিধাবিভক্তি রয়েছে সাংগঠনিক কার্যক্রমেও। নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত বর্তমান সংসদ সদস্য এবং সাবেক সাংসদ ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যানের পৃথক পৃথক আওয়ামী লীগের একাধিক মেয়র প্রার্থী স্বতন্ত্র প্রার্থীতা দিয়ে শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকতে পারেন বলেও রয়েছে ব্যাপক গুঞ্জন।

একই সাথে বিগত পৌর নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হতে মাঠে থেকে মনোনয়ন বঞ্চিত পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মনির আহম্মেদ ভূইয়া এবারও শেষ পর্যন্ত দলের মনোনয়ন চাইতে পারেন।

এছাড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের একক প্রার্থী হিসেবে নাম শোনা যাচ্ছে হাজী নুরুল ইসলাম হাওলাদারের। তিনি বিগত পৌর নির্বাচনেও পাখা প্রতীকে নির্বাচনী মাঠে ছিলেন।

আরেকটি সূত্র জানায়, সব দলের ভোট ব্যাংকে আঘাত হানতে পারেন জাতীয় পার্টি থেকে সদ্য আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া মো: আনোয়ার হাওলাদার। তিনি স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর সাথে ভোট যুদ্ধে অবতীর্ণ হবেন বলে জানা যায়। আওয়ামী লীগের দলীয় নেতাদের মধ্যে রাজনৈতিক রেষারেষিকে কাজে লাগিয়ে তিনি সুবিধা নিতে পারেন বলে মন্তব্য
অনেকের। আনোয়ার হাওলাদার গত নির্বাচনে জাতীয় পাটির লাঙ্গল প্রতিক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল।

কলাপাড়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব হুমায়ুন সিকদার বলেন, বিএনপিতে কোনো প্রার্থী সংকট নেই। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা পর একক প্রার্থী দিয়ে নির্বাচনী মাঠে থাকবে এবং বিএনপি একক প্রার্থী নিয়ে নির্বাচনী মাঠে নামবে।

কলাপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মোতালেব তালুকদার বলেন, আওয়ামীলীগ একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল এবং কুয়াকাটার উন্নয়নে কাজ করছে বর্তমান সরকার।

বিভিন্ন সূত্রমতে জানা যায়, একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন চাইতে পারে, তবে তৃর্ণমূলের ভোটের ভিত্তিতে দল যাকে মনোনয়ন দিবে তিনিই নির্বাচন করবে।তার বাইরে কেউ প্রার্থীতা দিলে তার বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চূড়ান্ত শেষে পাল্টে  যেতে পারে অনেক হিসেব-নিকেশ।

আগামীনিউজ/মিথুন

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে