Dr. Neem on Daraz
Victory Day

দুলাভাইয়ের সাথে আপত্তিকর অবস্থায় ধরা পড়ে মাকে খুন


আগামী নিউজ | হবিগঞ্জ প্রতিনিধি প্রকাশিত: আগস্ট ৫, ২০২০, ০৭:৫৪ পিএম
দুলাভাইয়ের সাথে আপত্তিকর অবস্থায় ধরা পড়ে মাকে খুন

ঘাতক শ্যালিকা শান্তি ও দুলাভাই মোগল মিয়া

শ্যালিকার সঙ্গে দুলাভাইয়ের শারীরিক সম্পর্ক দেখে ফেলায় প্রাণ দিতে হয়েছে শাশুড়ি ছালেমা বেগমকে (৪৫)। হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার করগাঁও গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ঘাতক দুলাভাই ও শ্যালিকাকে আটক করেছে পুলিশ।

বুধবার (৫ আগস্ট) দুপুরে হবিগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা নিজ কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।

আদালতে আসামিদের ১৬৪ ধারায় দেয়া জবানবন্দির বরাত দিয়ে এসপি মোহাম্মদ উল্ল্যা বলেন, উপজেলার করগাঁও গ্রামের হিরন মিয়ার স্ত্রী ছালেমা বেগম সাত সন্তানের জননী। স্বামী আরেকটি বিয়ে করে অন্যত্র বসবাস করেন। ছোট মেয়ে সেজমিন আক্তার শান্তিকে নিয়ে একই গ্রামে ভাগনে আব্দুর রহমানের বাসায় বসবাস করেন ছালেমা। আর বড় মেয়ে জেসমিন আক্তারকে ওই গ্রামের মোগল মিয়ার সঙ্গে বিয়ে দেন। বিয়ের কিছুদিন পর জেসমিন সৌদি আরবে চলে যান। এরপর থেকে মোগল মিয়া তার শিশুপুত্র ইয়াসিনকে নিয়ে শাশুড়ির বাসায় বসবাস করছেন। এ সুযোগে মোগল মিয়া শ্যালিকা সেজমিন আক্তার শান্তি বেগমের সাথে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পরে। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্কও গড়ে ওঠে। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে তাদের একাধিকবার সতর্ক করেন ছালেমা বেগম। ঈদুল আজহার দিনগত রাত দেড়টার দিকে সবাই ঘুমিয়ে থাকার সুযোগে শ্যালিকার রুমে যান মোগল মিয়া। সেখানে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হন তারা। ঘুম ভেঙে গেলে ছোট মেয়ের ঘরে গিয়ে মেয়ে ও জামাইকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পান ছালেমা।

এ সময় ছলেমা বেগম চিৎকার করেন। তাৎক্ষণিক ছালেমা বেগমের মুখ চেপে ধরেন তারা। এতেও দমাতে না পেরে ঘরে থাকা দা দিয়ে শাশুড়ির গলা, বুক ও ঘাড়ে একাধিক কোপ দেয় মোগল মিয়া। এ সময় মেয়ে শান্তি মায়ের পা চেপে ধরে। মৃত্যু নিশ্চিত করে মোগল মিয়া শ্যালিকাকে বলে আমি চলে যাওয়ার পর ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার দেবে। এরপর প্রতিবেশী আব্দুল মুমিন ওরফে রুমান এবং নোমান এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে প্রচারণা চালিয়ে দেবে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী শান্তি নিজের রক্তমাখা জামা বদলে তাই করে। তার চিৎকারে লোকজন ছুটে আসেন। পরদিন মেয়ের বক্তব্য শুনে মুমিন ও রুমানের নামে নবীগঞ্জ থানায় মামলা করেন নিহতের স্বামী। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিযুক্ত হন নবীগঞ্জ থানার এসআই মো. আবু সাঈদ। তিনি ঘরে তল্লাশি চালিয়ে মোগল মিয়া ও শান্তির রক্তমাখা জামা-কাপড় উদ্ধার করেন।

পরবর্তীতে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে শ্যালিকা ও দুলাভাই। এরপর মঙ্গলবার (৪ আগস্ট) সন্ধ্যায় জেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলামের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় তারা। এ সময় হত্যার রোমহর্ষক বর্ণনা দেয় দুই ঘাতক শ্যালিকা ও দুলাভাই।

তখন মোগল মিয়া ও শান্তি বেগম মিলে ছলেমা বেগমের মুখ চেপে ধরে ঘরে থাকা দা দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে। শাশুড়ির মৃত্যু নিশ্চিত করে মোগল মিয়া নিজ ঘরে গিয়ে রক্তমাখা কাপড় পরিবর্তন করে ঘুমিয়ে পড়ে এবং শান্তি বেগম ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার করতে থাকেন। এলাকাবাসী এগিয়ে এলে সে জানায় তার মাকে ডাকাতদল গলা কেটে হত্যা করেছে।

পুলিশ সুপার আরও জানান- এ ঘটনায় নিহতের স্বামী হিরন মিয়া বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় পুলিশ দুই ঘাতকসহ চারজনকে আটক করেছে। আটককৃতরা হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে।

আগামীনিউজ/মোহাম্মদ শাহ আলম/এমজামান

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে